সাত দফা সময় বাড়িয়েও পূরণ হলো না হজযাত্রীর কোটা
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতিতে এবার হজ প্যাকেজের খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিবন্ধনের সময় সাত দফা বাড়িয়েও নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি।
হজ নিবন্ধনের শেষ দিন গত বুধবার রাতে দেখা যায়, বাংলাদেশের হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবের নির্ধারিত কোটা পূরণে আরও ৮ হাজারের বেশি নিবন্ধন বাকি রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ওয়েব পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ১৮৭ জন এবার হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৯৬ জন এবং বেসরকারিভাবে ১ লাখ ৯ হাজার ১৯১ জন হজে যেতে চান।
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ চুক্তি অনুযায়ী এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সে হিসেবে কোটার চেয়ে ৮ হাজার ১১ জন কম হজযাত্রী মিলল এবার।
অন্যান্য বছরগুলোর তুলনায় এবার সরকারি ব্যবস্থায় হজের খরচ বেড়েছে লাখ টাকা, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরো বেশি, দেড় লাখ টাকা।
সৌদি আরব কিছু খাতে খরচ কমানোয় গত মার্চের শেষ দিকে হজ প্যাকেজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় সরকার। তাতে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে লাগছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে প্যাকেজ মূল্য হবে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা।
অর্থনৈতিক সংকটের এই সময়ে খরচ এতটা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। হজের খরচ কমাতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়। পরবর্তীতে সরকার খরচ ১১ হাজার টাকা কমিয়ে বারবার নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ালেও তাতে সাড়া মেলেনি।
এদিকে সরকার ঘোষিত উচ্চমূল্যের হজ প্যাকেজ কেন জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ২ এপ্রিল রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া একই দিন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন জানিয়েছে খোদ বেসরকারি হজব্যবস্থাপনায় জড়িত এজেন্সি মালিকদের সংগঠন-হাব। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবার হজের খরচ কমানোর কোনো সম্ভাবনা দেখানো তো দূরের কথা বরং আগামী বছর হজের খরচ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের হজ হবে ২৭ জুন। সেই হিসেবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি হজের নিবন্ধন শুরু হয়েছিল। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধন শেষ সময় থাকলেও তার বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। কোটার বিপরীতে খুবই কমসংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন ওই সময়।
পরে আবার নিবন্ধনের সময়সীমা ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়। সর্বশেষ ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হলেও ওই সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর পর্যায়ক্রমে ২১ মার্চ, ৩০ মার্চ এবং ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয় সময়।