ঢাকা ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যরকম

লেখা শেষে কলম পুঁতে দিলেই গাছ!

লেখা শেষে কলম পুঁতে দিলেই গাছ!

কাগজ, কলমের শীষ ও বীজ দিয়ে তৈরি বিশেষ এক ধরনের কলম উদ্ভাবন করেছেন শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান রিফাত। তিনি খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী, খুলনা মহানগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের লবণচরা এলাকার বাসিন্দা। পরিবেশবান্ধব এই কলম দিয়ে লেখা শেষে সেটি মাটিতে পুঁতলেই হবে গাছ। রিফাতের স্লোগান ‘সেভ ইওর আর্থ’। রিফাতের তৈরি এই কলম একদিকে লেখার কাজ করবে, অন্যদিকে সবুজ বনায়নে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন তিনি। মাহমুদুল হাসান রিফাত বলেন, ‘আর্ট পেপার বা পত্রিকার কাগজ, আঠা, কলমের শীষ ও গাছ বা সবজি বীজ দিয়ে বানানো হয়েছে এই কলম। এতে খরচ পড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। বাজারে যেসব কলম পাওয়া যায় সেগুলো প্লাস্টিকের, আমার কলম ৯৫ শতাংশ কাগজ ও বীজ দিয়ে তৈরি। এই কলম তৈরির উদ্দেশ্য সম্পর্কে রিফাত বলেন, এর মাধ্যমে তরুণ সমাজকে একটি বার্তা দেয়া, যেন সবাই সবুজায়নের মধ্যে থাকে। অধিকাংশ মানুষ প্লাস্টিকের পণ্য বাসায় নিয়ে আসে, যা পরিবেশকে দূষণ করে, এটা কেউ খেয়াল করে না। এই কলমটা সকলেই ব্যবহার করতে পারব। কলমে আমি লেখেছি ‘সেভ ইওর আর্থ’। যখন কলম হাতে এই বার্তা যাবে, তখন সেই ব্যক্তি অন্তত একটি গাছ লাগাবে অথবা আমার এই কলমটি যদি ফেলেও দেয় তাহলে গাছ হবে। মাহমুদুল হাসান রিফাত বলেন, আমি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমন কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন প্রত্যেক শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে সবুজায়নের মাধ্যমে। আমি চাই শিক্ষার্থীসহ সকলে এমন কলম বানানো ও ব্যবহারে এগিয়ে আসুক। রিফাতের বন্ধু আবির ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে যেসব কলম ব্যবহার করে আসছি সেগুলো ফেলে দিলে পরিবেশের ক্ষতি করে। কারণ, সেগুলো পচনশীল নয়; যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। রিফাত যে কলমটি তৈরি করেছেন, এতে কাগজ, কলমের শীষ ও বীজ ব্যবহার করেছেন। লেখা শেষে কলমটি ফেলে দিলে বা উল্টোভাবে পুঁতে দিলে গাছ হবে। গাছ আমাদের বন্ধু, পরিবেশের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল কবীর বলেন, পরিবেশ রক্ষার্থে রিফাতের এই কলম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিলে বাংলাদেশে সবুজায়ন হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ বাড়বে। নগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, কলমটি পঁচে যাওয়ার পর গাছ হচ্ছে। এটি যেমন অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করবে, তেমনই পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। নগরীর ৩১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, রিফাত যে কাজটা করেছে, এটি আসলেই ব্যতিক্রমী কাজ। কলমে সুন্দর লেখা হয় এবং লেখা শেষে ফেলে দিলে পঁচে যাবে। পুতে দিলে গাছ হবে। এ বিষয়ে তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত