ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা

ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা

জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠন নিয়ে ‘অনিশ্চয়তা’ দেখা দিয়েছে। একাধিকবার হল কমিটি দেয়ার আশ্বাস দিয়েও দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এদিকে গত তিন মাস আগেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন পদ বঞ্চিত থাকায় হল কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। এতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলেও জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা ঘটছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর আংশিক এবং ২০১৭ সালের ২৮ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ হল কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এরপর আর বিশ্ববিদ্যালয়ে হল কমিটি করা হয়নি। এদিকে ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি আকতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি এবং হাবিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি একবছর মেয়াদি বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এখনো নতুন নেতৃত্ব পায়নি জাবি ছাত্রলীগ। নেতাকর্মীদের বারবার আশ্বস্ত করলেও হল কমিটির বিষয়ে কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতারা। ফলে হল কমিটি নিয়ে ধোয়াশার মধ্যে আছে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে অভিযোগ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতা বলেন, হল কমিটি হয়ে গেলে সবাই হল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তখন পদের আশায় নেতাদের প্রটোকল দেয়ার লোক থাকবে না। এই আশঙ্কায় তারা হল কমিটি নিয়ে গড়িমসি করছে। ২১ নম্বর হল কমিটির সভাপতি পদপ্রত্যাশী জোবায়েদ আশিক বলেন, শাখা ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার পূর্বে নেতারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, সম্মেলনের মাধ্যমে হল কমিটি দেয়া হবে। কিন্তু পাঁচ মাস কেটে গেলেও এখনো কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।

তিনি আরো বলেন, হল কমিটিই আসল। হলের কমিটি থাকলে সংগঠন গতিশীল থাকে এবং পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক চর্চা হয়। সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাই হল কমিটি না হলে জাবি ছাত্রলীগ শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে একাত্ম হতে পারবে না। হলের মধ্যে বিভক্তি থেকে যাবে। আমরা চাই, দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে হলের কমিটি ঘোষণা করা হোক।

শেখ হাসিনা হলের সভাপতি পদপ্রার্থী সাবিহা ইয়াসমিন সাথী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও এখনো সাংগঠনিক পরিচয় পাইনি। যা অত্যন্ত হতাশাজনক। সভাপতি-সেক্রেটারি আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, ঈদের পর কর্মীসভা শেষে হল কমিটি ঘোষণা করবেন।

মীর মোশাররফ হোসেন হলের সভাপতি পদপ্রার্থী এএসএম মোস্তফা মনোয়ার সাগর সিদ্দিকী বলেন, হল কমিটি ঘোষণা করলে ছাত্রলীগ গতিশীল হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাস করি, দ্রুত কমিটি ঘোষণা হলে প্রতিটি হল ইউনিট সংগঠনের জন্য আরো বেশি নিবেদিতপ্রাণভাবে কাজ করতে পারবে। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, রোজার ছুটি শেষে প্রতিটি হলে কর্মিসভা শুরু হবে। মে মাসের মধ্যে আমরা সব হলে কর্মিসভা শেষ করে সম্মেলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করব। আশা করি জুন মাসে সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা নতুন হলে কমিটি ঘোষণা করতে পারব। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রটোকলের রাজনীতি করি না। প্রটোকলের জন্য কমিটি হচ্ছে না এই দাবি একেবারেই অবান্তর। হল কমিটির মাধ্যমে শাখা ছাত্রলীগ তার পূর্ণাঙ্গ সাংগঠনিক চর্চায় ফিরবে এবং ছাত্রলীগের শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করবে। সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, পূর্বে কমিটি না হওয়ার কারণ হিসেবে আমি সাবেক নেতাদের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়া করব। আমাদের সদিচ্ছা আছে। আশা করি কর্মী সম্মেলনের শেষ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা হল কমিটি ঘোষণা করতে পারব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত