৬৫০ স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালিত

রাষ্ট্র এখন দুর্নীতির চূড়ান্ত পর্যায়ে : বিএনপি

প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ, দ্রব্যমূল্যেরে ঊর্ধ্বগতি, সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১০ দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ সব মহানগরীর থানা এবং উপজেলা পর্যায়ে গতকাল ২ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি করেছে বিএনপি। বেলা ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। এছাড়া আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১ সপ্তাহ সব বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও প্রচারপত্র বিলি কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি হবে বিকাল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত। এই কর্মসূচি সমন্বয়ের জন্য বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ ১৩টি মহানগরীর ১২৮টি সাংগঠনিক থানায় এবং সাড়ে ৫০০ উপজেলা মিলে প্রায় সাড়ে ৬০০ স্থানে একযোগে এ কর্মসূচি হয় । এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, দলের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশ নেন।

প্রতিটা থানা বিএনপিকে নিজ নিজ থানার সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচি পালন করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল দলটি। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সমমনা বিভিন্ন দল ও জোটগুলোও এই কর্মসূচি পালন করে।

রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি এবং সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট। তবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের এদিন কোনো কর্মসূচিতে ছিল না।

রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ডক্টর রেদোয়ান আহমদ বলেন, এই সরকার নিশিরাতের ভোট ডাকাতির সরকার। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়, যার কারণে তাদেরকে কোথাও জবাবদিহি করতে হয় না। যখন যা ইচ্ছা তাই করে। কথায় কথায় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে এই সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে দমনমূলক আচরণ করছে। দেশটাকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে। নিশিরাতের সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে না দিয়ে দ্রুত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় তারা পালানোর জায়গাও পাবে না। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের শাস্তি তাদের দেশের মাটিতেই পেতে হবে।

রাজধানীর রামপুরা থানা বিএনপির উদ্যোগে পল্লীমা সংসদের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম?্যান শামসুজ্জামান দুদু ব?লে?ন, সরকারি দলের দুর্নীতিমুক্ত নেতাকর্মী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। সরকারি পর্যায়ের দুর্নীতি এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে। দে?শে দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাষ্ট্র এখন দুর্নীতির চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। মন্ত্রী এমপিসহ সরকারি দলের দুর্নীতিমুক্ত নেতাকর্মী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। সরকারি পর্যায়ের দুর্নীতি এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। দুর্নীতিতে ব্যাংকের এখন এমনই রূপ সব ব্যাংক বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। সরকারি পর্যায়ের পেশাজীবীরা দুর্নীতিমুক্ত থাকতে পারছে না। দুর্নীতি রাষ্ট্রকে কুরে কুরে খাচ্ছে।

এদিকে রাজধানীর বাড্ডা থানা বিএনপি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু বলেন, এই সরকার অবৈধ, ভোট ডাকাত সরকার, এই সরকারের সব কর্মকাণ্ড অবৈধ, অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে মানুষকে নির্যাতন নিপীড়ন করছে। সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে করা হয়েছে দলীয়করণ। সারা দেশে অবৈধ সরকারের অবৈধ পেটোয়া বাহিনী এরা পুলিশ নাকি ছাত্রলীগ বোঝার উপায় নাই। এরা দিনে ছাত্রলীগ করে রাতে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গুম করে, খুন করে, গ্রেপ্তার, নির্যাতন-নিপীড়ন করে সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়। ইংরেজরা পারেনি, পাকিস্তানিরা পারেনি, এরশাদ পারেনি এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনাও পারবে না। শরীরের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। আওয়ামী লীগের পতন এই বাংলার মাটিতেই হবে। বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ।

এর আগে ১ এপ্রিল রাজধানীসহ সব মহানগর ও জেলা সদরে ২ ঘণ্টা যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি ছিলেন।