ঈদকে সামনে রেখে দূরপাল্লার বাসের টিকিটের জন্য হাহাকার, হয়রানি ও ঝক্কি-ঝামেলা থাকলেও এবার বাস কাউন্টারগুলোতে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেখা গেছে। রাজধানীর কোনো বাস কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় নেই। বাসের টিকিট বিক্রির ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। গাবতলী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর ও উত্তরায় অধিকাংশ কাউন্টারই ফাঁকা। জানা গেছে, ঈদুল ফিতর ২২ এপ্রিল (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) ধরে বাস কাউন্টারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টারগুলোতে ২০ এপ্রিলের টিকিট না মিললেও ১৬, ১৭, ১৮, ১৯ ও ১ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট পর্যাপ্ত।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শ্যামলী, হানিফসহ অধিকাংশ কাউন্টারে আগাম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। ইউনিক, সৌদিয়াসহ কয়েকটি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হলেও যাত্রীদের সাড়া কম। তবে রয়েল পরিবহণের কাউন্টারে টিকিট কাটতে আসা যাত্রী আব্দুল আহাদ বলেন, কাউন্টারে ২০ এপ্রিলের টিকিট কাটার জন্য এসেছি। টিকিট বিক্রি শুরুর দিনে কাউন্টারে টিকিট কাটার উদ্দেশ্যে এসেছি। কিন্তু এসে শুনছি ২০ তারিখের টিকিট নেই। আসলে ঈদের দুই দিন আগের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
রয়েল পরিবহণের কাউন্টার মাস্টার বলেন, অধিকাংশ যাত্রী ২০ এপ্রিলের টিকিট চাইছেন। সকাল থেকে যারা টিকিট নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই ২০ এপ্রিলের। একদিনের টিকিটের এত চাপ থাকলে আমরা দেব কোথা থেকে। আমাদের তো গাড়ি এবং সিট অনুযায়ী টিকিট দিতে হবে।
সায়েদাবাদ ইউনিক বাস কাউন্টারের শাহের আলী বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আমরাও আগাম টিকিট বিক্রি করছি। আমাদের বাড়তি গাড়ি আছে ও বিকল্প ব্যবস্থা আছে। তাই আগাম টিকিট বিক্রি করতে শুরু করেছি। কোন জায়গায় যানজটে গাড়ি আটকা পড়লে বিকল্প গাড়িগুলো ছেড়ে দিই।
সাকুরা বাস কাউন্টারের সেলস এক্সিকিউটিভ মো. বাবুল বলেন, ঈদের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে দিয়ে দিয়েছি। আমাদের ইতোমধ্যে অনেক টিকিট শেষও হয়ে গেছে। অনলাইনে পুরো টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে মানুষ টিকিট পায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। রাস্তায় যানজটে শিডিউল বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছেন না।
হানিফ ৫ নম্বর কাউন্টারের ম্যানেজার মো. ইকবাল বলেন, আমাদের কাউন্টারে ঈদের টিকিট নিয়ে বাড়তি চাপ নেই। অগ্রিম টিকিটও বিক্রি করছি না। আমরা সেভাবে আগাম বিক্রিও করব না। কারণ, ঈদের সময় গাড়ির সময় দিয়েছি সকাল ৯টা, সে সময় গাড়ি যানজটে হয়তো পড়ে থাকবে পোস্তাগোলা। তখন আরেক ধরনের সমস্যা হয়। তাই ঈদের সময় তাৎক্ষণিক টিকিট বিক্রি করি। গতবারও আমরা অগ্রিম টিকিট বিক্রি করিনি। এবারও অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।