ঢাকা ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাঙামাটিতে বিজু উৎসব

ফুল ভাসিয়ে দুঃখের বিদায় সুখের প্রার্থনা

ফুল ভাসিয়ে দুঃখের বিদায় সুখের প্রার্থনা

সুর্যোদয়ের সাথে সাথে নদীর জলে ফুল ভাসিয়ে পুরোনো বছরের দুঃখণ্ডকষ্ট বিদায় দিয়ে বাংলা নতুন বছরের শুভকামনার প্রার্থনা দিয়ে শুরু হয়েছে বিজু উৎসব। গতকাল সকালে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পাহাড়ে তিন দিনের ‘বিজু’ উৎসব শুরু করেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন।

চৈত্র মাসের ২৯ তারিখে ভোরে ভোরে নদীতে ফুল ভাসানোকে বলা হয় ফুল বিজু। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে পাহাড়ের নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা এই ফুল বিজুতে যোগ দেয়। সমাজ কিংবা গোত্র ভেদে নদীর তীরে ফুল ভাসানো নিয়ে থাকে নানা আয়োজন। সমাজের রীতি অনুযায়ী ভোরে নদীর জলে ফুল ভাসিয়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে নানা রকমের ফুল সংগ্রহ করে ভোরে নদীর জলে ফুল ভাসিয়ে দেয়। গতকাল নদীতে ফুল ভাসাতে আসেন গর্জনতলীর বাসিন্দা ঝিনুক ত্রিপুরা, লক্ষ্মী ত্রিপুরা ও জয়ন্ত চাকমা। তারা জানান, পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ফুল বিজু আয়োজন করা হয়। পুরোনো যত দুঃখ কষ্ট দূর করে, নতুন বছর যাতে সুখে শান্তিতে কাটে- এই প্রার্থনা করা হয় নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় রাঙামাটি শহরের গর্জনতলী সংলগ্ন কাপ্তাই হ্রদে জেগে উঠা দ্বীপে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নানা আয়োজনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ভাসানো হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাচাং বিদ্যুৎ কুমার ত্রিপুরার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী ও জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা প্রমুখ। দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে বয়স্কদের স্নান, ঐতিহ্যবাহী পাজন রান্না, পাহাড়ি শিল্পীদের পরিবেশনায় গান ও নৃত্য এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে, ফুল ভাসানোর পর ঘরে ঘরে উৎসব বিরাজ করতে থাকে। টানা তিন দিন পাহাড়ের সর্ববৃহৎ এই উৎসবে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মাতোয়ারা থাকে। দেশ ও দেশের বাইরে থেকেও অনেকে যোগ দেন এ উৎসবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত