সাংবাদিকদের র‌্যাব ডিজি

মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে উড়ো চিঠি কোনো জঙ্গি সংগঠনের হুমকি নয়

আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এটা তৃতীয় ব্যক্তির কাজ

প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে উড়ো চিঠিটি আসলে কোনো জঙ্গি সংগঠনের হুমকি নয়। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তৃতীয় কোনো ব্যক্তি এটা করেছে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার বিষয়ে যে চিরকুট চারুকলা শিক্ষার্থীকে পাঠানো হয়েছে তা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয়া হচ্ছে। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব প্রধান বলেন, হুমকির চিরকুটটি আমি দেখেছি ও পড়েছি। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষ এই কাজ করেছে। এটা আসলে কোনো জঙ্গির হুমকির ঘটনা না। তারপরেও আমরা সতর্ক রয়েছি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এলিট ফোর্স র‌্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এবং র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈনসহ অন্যান্য র‌্যাব কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কোনো এক ‘থার্ড পারসন’ এই চিরকুট পাঠিয়েছে উল্লেখ করে ডিজি এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, একটি প্যানিক তৈরি করা। আর কিছু না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

রমনার বটমূলের সার্বিক নিরাপত্তা বলয় প্রসঙ্গে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘যে কোনো ধরনের নাশকতা মোকাবিলায় র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে। নেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র‌্যাবের গোয়েন্দা ও সাইবার মনিটরিংয়ে কোনো জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই, তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

রমনার বটমূলে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি। এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা থাকছে, ফিরে আসছে রমনা বটমূলের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।

এম খুরশীদ হোসেন বলেন, রমনা বটমূলে শেষ মুহূর্তে চলছে মঞ্চ সাজানোর কাজ। একই সঙ্গে বৈশাখের আয়োজন ঘিরে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে গোটা এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) আওতায় আনতে কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।

এম খুরশীদ হোসেন বলেন, সারা দেশের মানুষের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়নসহ নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

বাংলা নববর্ষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীসহ সারাদেশে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে র‌্যাব প্রধান বলেন, পয়লা বৈশাখের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজধানীর টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা বটমূলসহ যেসব এলাকায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে সেসব এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল, চেকপোস্ট ও অবজারভেশন পোস্টসহ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে র‌্যাব প্রধান বলেন, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিং করা হচ্ছে। এছাড়া যেকোনো উ™ূ¢ত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া র‌্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাবের রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া যেকোনো হামলার ঘটনা মোকাবিলায় র‌্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিম প্রস্তুত রয়েছে। নাশকতার যেকোনো ঘটনা মোকাবিলায় র‌্যাবের টহল টিম ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো গুজব ঠেকাতে আমাদের সাইবার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে আসা নারীদের ইভটিজিং করার ঘটনা প্রতিরোধে র‌্যাবের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।