সুসংবাদ প্রতিদিন
কুড়িগ্রামে ধরলার চরে পটোলের চাষ
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
জুনের শেষ সপ্তাহে যখন ধরলার পানি বেড়ে বন্যা হবে, তখন ডুবে যাবে পটোল ক্ষেত। পুরো মৌসুম পটল বিক্রি করা হবে না, এর পরও বন্যা আসার আগে যে পরিমাণ পটোল বিক্রি হবে, তাতেই উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ লাভ হবে। আর এ আশায় ধরলার চরের শত শত কৃষক পটোলের চাষ করে নিজেদের ভাগ্যবদল করেছেন বিগত কয়েক বছরে। এ বছর পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চরজুড়ে পটলের সবুজ ক্ষেত মায়াবি হাতছানি দেয়। বাজারে পটোলের দামও মিলছে আশানুরুপ। তাই বেশি লাভের আশায় বুক বেঁধে চরের কৃষক। কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামজুড়ে ধরলা নদীর বুকে প্রায় ৬০ একর জমিকে পটোল চাষ করেছে প্রায় শতাধিক কৃষক।
খামারবাড়ির দেয়া তথ্যে চলতি খরিপ মৌসুমে ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর সবজির মধ্যে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পটলের আবাদ হয়েছে। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর বাকি মৌসুম জুড়ে পটল বিক্রি করতে পারবে চাষিরা। বাজারে চাহিদাও প্রচুর। এখন রমজান মাস উপলক্ষ্যে নতুন পটোলের চাহিদা বেশি। মাঠে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দাম পরলেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পটল। এক বিঘা জমিতে পটল চাষ করে সব খরচ মিটিয়ে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুনাফা হয়। তাই অন্য ফসল চাষ না করে এখানকার কৃষকরা নিজের সঞ্চিত অর্থ ছাড়াও ঋণ নিয়ে পটল আবাদ করছেন প্রতি বছর।
পটলচাষি আমজাদ জানান, রমজান মাসের এ সময়ে বাজারে নতুন পটলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। গতকাল ২ হাজার টাকা মণে পাইকাররা নিয়ে গেছে। আজ একটু দাম কমেছে। ১ হাজার ৮০০ টাকা দাম বলেছেন। এখনো দরাদরি চলছে।
উত্তর নওয়াবশ গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, গতবার এক একর জমিতে পটল আবাদ করেছি। ক্ষেত তৈরি করতেই প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবার জাংলা খরচ লাগছে না। ফলে অর্ধেক খরচে পটল লাগানো হয়েছে। এখন পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। আশা করছি ভালো দাম পাব। কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টি আর প্রচণ্ড খরার কারণে পটলের পাতা কিছুটা লালবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা ঘর ঘন স্প্রে করছেন ক্ষেতে। পটলচাষি জুবায়েদ ও লিটন জানান, বৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরার কারণে পটল ক্ষেত লালবর্ণ ধারণ করছে। নানা ধরনের ভিটামিন জাতীয় প্রয়োগ করন, তিনি আশা করেছেন রোগ-ব্যাধি দূর হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চরাঞ্চলে পটলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ-ব্যাধির কারণে উৎপাদনে যেন কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন।