‘ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ড ষড়যন্ত্রের আভাস’
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন জায়গা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ষড়যন্ত্র দেখছে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। গতকাল রাজধানীর ধোলাইপাড় উচ্চবিদ্যালয় মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উদ্যোগে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন জায়গা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। আজকেও (গতকাল) ঢাকা সুপার নিউ মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এত ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের পিছনে ষড়যন্ত্রের হাত আছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। কারণ এত ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কোন দুর্ঘটনা হতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত অগ্নিকাণ্ডে পারদর্শী, তাদের এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামাতের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হলে আমাদের সকল মেহনতি মানুষ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একই সাথে আমাদের সকল প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, সংখ্যালঘুদের উপর পাকিস্তানি কায়দায় হত্যা-নির্যাতন চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, সাংবাদিক ভাইদেরকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করেছে। ২০১৩-২০১৪ সালে ওরা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। হাজার হাজার যানবাহন পুড়িয়েছে, শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য আজ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যাতে চতুর্থ বিপ্লব মোকাবিলায় পারদর্শী হতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা আমাদেরকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন কিছু খাদ্য উপহার দিয়ে। এই উপহারগুলো আপনাদের অধিকার। এগুলোকে অনুদান মনে করবেন না। সরকার সর্বদা সচেষ্ট আছে আপনাদের দুঃখণ্ডকষ্ট লাঘব করার জন্য। আজকে বিশ্বমন্দা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্রের দামের ঊর্ধ্বগতি হওয়াতে আপনাদের যে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে সেটা আমরা অনুভব করতে পারি। কিন্তু আপনারা দুশ্চিন্তা করবেন না।
শেখ পরশ বলেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ আপনাদের পাশে আছে এবং চিরদিন থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের সাথে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক। কারণ এদেশের মানুষ চরম বিপদের সময় আমাদের পাশে ছিল এবং সবসময় থাকে। জনগণ থাকে সেই সকল রাজনৈতিক দলের সাথে যারা দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে, দেশকে গড়ার স্বপ্ন দেখায়। আমাদের নেত্রী এই দেশকে গড়ার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে, তাই আওয়ামী লীগের সাথে এই দেশের মানুষের রক্তের সম্পর্ক। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার যোগ্যতা রাখে। এই যোগ্যতা শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যারই আছে।
তিনি আরও বলেন, মাত্র ৯ মাস পরে আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আমার বিশ্বাস আপনারা নিশ্চয়ই তাদেরকেই ভোট দেবেন, যারা আপনাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করেছে। আপনারা নিশ্চয়ই তাদেরকেই ভোট দেবেন, যাদের দ্বারা গঠনতন্ত্র, অর্থাৎ আপনাদের অধিকার নিশ্চিত হবে, শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা হবে এবং সবার জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এই অঙ্গীকারসমূহ পূরণ হলেই আমরা গড়ে তুলতে পারব একটা সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ। আপনারা শেখ হাসিনার নৌকাকে ভোট দিলে আপনাদের জীবন মানের ধারাবাহিক উন্নতি অব্যাহত থাকবে। একটু যদি পেছনের দিকে তাকান দেখতে পাবেন বিএনপির সময় কি অবস্থা ছিল। আপনাদের আয় কত ছিল? রাস্তাঘাটের অবস্থা কি ছিল? শিক্ষার সুযোগ কি ছিল? চিকিৎসা ব্যবস্থা কি ছিল? আপনাদের বাসস্থানের চিন্তা কে করে যাচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; তার যুগান্তকারী আশ্রায়ণ প্রকল্পের আওতায়। যুবলীগের চেয়ারম্যান আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল পাঁচবার, আর আমাদের সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন করেছে, শক্তিশালী করেছে। আজকে একটা মেসেজ ক্লিয়ার দুর্নীতিবাজ যেই হোক, কারোই রক্ষা নেই। আজকে দলীয় নেতাকর্মী বলেন আর প্রশাসনিক আমলা বলেন, দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতেই হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে, তাই এমপি-মন্ত্রী বলেন আর প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না, সাজা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল, আর শেখ হাসিনা সরকার জঙ্গিবাদ এদেশ থেকে প্রায় নির্মূল করে দিয়েছে। ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পর থেকে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত রয়েছে বলেই একটা স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে। কিছু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা থাক সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে।
ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্ব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচএম রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মানিক লাল ঘোষ, কেন্দ্রীয় সদস্য সাইদুর রহমান জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মাকসুদুর রহমান, ইব্রাহিম খলিল মারুফ, দপ্তর সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ, অর্থ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ সায়মন, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক আলতাফ হোসেন, সদস্য গোলাম মোস্তফা, সাহাবুদ্দিন দেওয়ান রাজুসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।