ঈদে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে দেশের বৃহৎ গাউছিয়া মার্কেট

সুতা ও কাঁচামালের দাম বেশি হওয়ায় কাপড়ের দামও বেশি

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রিয়াজ হোসেন, রূপগঞ্জ

পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বিগত কয়েক বছর মহামারি করোনার কারণে ব্যাপক লোকসানে থাকা দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেটে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বেচাকেনা। জাকাতের কাপড়ের জন্য উপচেপড়া ভিড় করছে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া সাধারণ মানুষের পদচারণায় জমে উঠেছে এই বাজার। তবে বিগত সময়ের তুলনায় এবার সুতা ও কাঁচামালের দাম অনেকটা বাড়তি থাকার কারণে কাপড়ের দাম কিছু বেশি বলে দাবি ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। কেনাকাটা করতে এসে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারপরও এবারের ঈদে বিগত সময়ের লোকসান কাটিয়ে আশানুরূপ বেচাকেনা হবে বলে আশাবাদী গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেটে রয়েছে প্রায় ৭ হাজার। বেশিরভাগ দোকান পাইকারিভাবে বিক্রি হয় থ্রি-পিস, কাপড়, লুঙ্গি, শাড়ি, শার্ট, প্যান্টসহ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের কাপড়। সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বসে গাউছিয়া মার্কেটে। আর বাকি দিনগুলোতে বেশিরভাগ দোকানে খুচরাভাবে বেচাকেনা চললেও পাইকারি দোকানগুলো হাটের দিন ছাড়া তেমন খোলা হয় না। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রোজার শুরু থেকে সবগুলোও দোকানেই প্রতিদিন চলছে বেচাকেনা। বেচাকেনায় জাকাতের কাপড় যুক্ত থাকায় বিক্রি হচ্ছে আশানুরূপ।

এখানে রাজধানী শহর ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, সিলেট, বরিশাল, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভৈরব, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও পেশার মানুষ আসেন পাইকারিভাবে কাপড় কিনতে। অন্যান্য দিনের তুলনায় বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনাও। তবে বিগত সময়ের চেয়ে এবার সুতা ও বিভিন্ন কাঁচামালের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় কাপড়ের দাম অনেকটা বেশি। প্রতি থ্রি-পিস ও শাড়িতে বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা। এ কারণে নিম্ন আয়ের লোকজনদের কেনাকাটা করতে এসে হিমশিম থেকে হচ্ছে। কাপড়ের দাম বাড়তি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারপরও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে তাদের পরিবার পরিজনদের জন্য বিভিন্ন দামের শাড়ি কাপড়, লুঙ্গী, থ্রি-পিস কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

মার্কেটের ব্যবসায়ী জানান, প্রাণঘাতী করোনার কারণে বিগত কয়েক বছর বেচাকেনা অনেকটা কম হওয়ায় অনেকটা হতাশায় পড়েছিল তারা। এবার ঈদে বেচাকেনা আগের বছরগুলো থেকে বেশি হওয়ায় লোকসান কাটিয়ে অনেকটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশাবাদী মার্কেটের দোকানদাররা। তবে এবার করোনার পর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের পরিবারের লোকজন কেনাকাটা করতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে বলে দাবি করছেন দোকানদাররা।

এ ব্যাপারে গাউছিয়া মার্কেটের ম্যানেজার আউয়াল ভূঁইয়া বলেন, এ মার্কেটে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতা অনেক বেশি। তারা যেন কোনো প্রকার সমস্যায় না পড়ে সেজন্য পুরুষের পাশাপাশি পর্যাপ্ত নারী নিরাপত্তা কর্মী রাখা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ বেচাকেনা অনেকটা ভালো হয়েছে। আশারাখি সামনের সময়গুলো ভালো বেচাকেনা হবে। গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, মার্কেটের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের নিয়োজিত পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে। আশা রাখি কোনো প্রকার অপ্রীতিকরণ ঘটনা ঘটবে না। এমনকি বেচাকেনাও ভালো হবে।