ঢাকা ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ফ্লাইওভারের আশীর্বাদ

অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামে যানজট

অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামে যানজট

চট্টগ্রাম নগরীতে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ফ্লাইওভারের কারণে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে যানজট। মৌসুমের এ সময় যানজটে প্রচণ্ড নাকাল হতো চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দারা। এখন বড় বড় সড়কে যানজট তেমন নেই বললেই চলে। সর্বশেষ বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের সঙ্গে র‌্যাম্প (উঠানামার পথ) নির্মাণ করায় যানজট অনেকটা কমে গেছে। তবে ফ্লাইওভারের সঙ্গে যুক্ত নেই, এমন সড়কে বেড়েছে যানজট। এসব সড়কে দ্রুত ফ্লাইওভার নির্মিত না হলে যানজটে নাকাল হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রামে ২০০৬ সাল থেকে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এই ফ্লাইওভারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তৎকালীন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। তিনি যখন ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ হাতে নেন তখন বিস্তর সমালোচনা হয়। খোদ নগর পরিকল্পনাবিদরাও প্রশ্ন তুলেন ফ্লাইওভারের যৌক্তিকতা নিয়ে। কিন্তু সেই ফ্লাইওভারগুলো এখন নগরীর যানজট পরিস্থতি প্রায় স্বাভাবিক করে ফেলেছে।

বর্তমানে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন এক কিলোমিটার এলাকা থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার আছে। এ ফ্লাইওভার দিয়ে নগরীর অন্তত অর্ধেক অংশের লোকজন যাতায়াত করে থাকে। মুরাদপুর থেকে নগরীর লালখান বাজার পর্যন্ত আরেকটি ফ্লাইওভার আছে। এ ফ্লাইওভারটি আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার নামে পরিচিত। এটিও সিডিএ নির্মিত ফ্লাইওভার। আরেকটি ফ্লাইওভার আছে কদমতলী থেকে ডিটি রোড পর্যন্ত। তিনটি ফ্লাইওভার দিয়ে দিনে রাতে হাজার হাজার যানবাহন চলছে। ঈদের বর্তমান মৌসুমে যানবাহন চলাচল বেড়ে গেছে। কিন্তু আগে নির্মিত ফ্লাাইওভারগুলো এখন যানজট সিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মূল সড়কে যানজট তেমন নেই। শুধু ইফতারের আগ মুহূর্তে যানজট বেশি হয়। অন্য সময় যানজট তেমন থাকে না।

সিডিএ সূত্র জানায়, লালখান বাজার এলাকা থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত আরেকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট আর থাকবে না। বিশেষ করে বিদেশগামী লোকজন চরম ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবেন।

নগরীর মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ফ্লাইওভার নির্মাণ হওয়ার আগে মুরাদপুর থেকে জিইসি মোড় এলাকা পর্যন্ত দিনভর যানজট লেগেই থাকত। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথেই আটকে থাকতেন লোকজন। যানবাহনের দীর্ঘসারি চোখে পড়ত প্রায় সময়। বিশেষ করে ঈদের আগ মুহূর্তে তীব্র যানজটে চলাফেরা দায় হয়ে পড়ত। এখন সেই তীব্র যানজট নেই এই সড়কে। ফ্লাইওভারের সুফল এখন নগরবাসী ভালোভাবেই পাচ্ছে। আমরা চাই যানজটমুক্ত চলাফেরার সেই সুফল অক্ষুণ্ন থাকুক। এদিকে যেসব সড়কে ফ্লাইওভার নেই, সেসব সড়কে এখন তীব্র যানজট লেগেই আছে। বিশেষ করে নগরীর নিউ মার্কেট থেকে বাদুরতলা পর্যন্ত নিত্য যানজট চোখে পড়ে। ইফতারির আগে যানজট ভয়াবহ রূপ নেয়। অনেক সময় ইফতারির আগে কর্মস্থল থেকে বাসায় পৌঁছতে পারে না লোকজন।

নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা আবু তৈয়ব আশরাফি বলেন, এই এলাকায় বাস টার্মিনাল থাকায় যানবাহনের চলাচল বেশি। চান্দগাঁও বাসটার্মিনাল থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার খুব বেশি প্রয়োজন। তাতে এখানকার যানজট পরিস্থিতি উন্নতি হবে।

এ ব্যাপারে সিডিএ’র দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে চলমান ফ্লাইওভার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত। এটি ছাড়া আর কোনো ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প আপাতত হাতে নেই। তবে ভবিষ্যতে চাহিদার ভিত্তিতে আরও ফ্লাইওভার নির্মাণ হতে পারে। তখন বর্তমানের যানজট পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত