ইউক্রেনের শস্য আমদানিতে পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরি যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইউরোপীয় কমিশন। দেশ দুটি বলছে, তাদের কৃষি খাতকে রক্ষা করার জন্য সস্তা শস্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রয়োজন ছিল। এই নিষেধাজ্ঞা শস্য, দুগ্ধজাত পণ্য, চিনি, ফল, শাকসবজি এবং মাংসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এবং জুনের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, কোনো একটি দেশ আলাদাভাবে বাণিজ্য নীতি তৈরি করতে পারে না। এছাড়া একতরফা পদক্ষেপ সহ্য করা হবে না। তবে পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। এক বিবৃতিতে কমিশনের মুখপাত্র বলেন, এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং সময়ে ইইউর সমন্বিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ওই দুটি দেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আইনি ভিত্তি বোঝার চেষ্টা করছে।
বেশিরভাগ ইউক্রেনীয় শস্য কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়। কিন্তু গত বছর রাশিয়া হামলা চালানোর পর রপ্তানির এই রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রচুর পরিমাণে শস্য মধ্য ইউরোপের বাইরে যেতে পারছে না। পরে জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই চুক্তিতে ইউক্রেনকে সমুদ্রপথে রপ্তানি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তবে ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়ার অতিরিক্ত তদারকির কারণে রপ্তানি প্রক্রিয়াটি গতিশীলতা হারিয়েছে।
এদিকে শনিবার পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরি ইউক্রেনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। দেশ দুটির স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
কৃষকরা বলেছেন, ইউক্রেন থেকে পণ্য আমদানির কারণে তাদের বাজার সস্তা ইউক্রেনীয় শস্যে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা নিজস্ব উৎপাদিত শস্য বিক্রি করতে পারছেন না।
পোল্যান্ডের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিবিষয়কমন্ত্রী ওয়াল্ডেমার বুডা স্পষ্ট করে বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা ট্রানজিট পণ্যের পাশাপাশি পোল্যান্ডে আসা পণ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। তিনি পোল্যান্ডের মধ্য দিয়ে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি স্কিমের আওতায় এক্সপোর্ট পাস চালু করতে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান। এতে করে ইউক্রেনের পণ্যগুলো স্থানীয় বাজারে ঢুকতে পারবে না। ইউক্রেন বলছে, এই পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির পরিপন্থী। ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা পোল্যান্ডের কৃষি খাতের পরিস্থিতির প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সময় তারা পাশে ছিল।