ফাঁকা ঢাকায় উত্তাপ কমেছে সবজির বাজারে

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। এদিকে ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাজারে উত্তাপ কমেছে সবজি, তরিতরকারির। তবে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে পোলাও, চিনি, শসাসহ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, হুটহাট করে ক্রেতা কমে যাওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মধ্যবাড্ডা, মেরুল বাড্ডাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। বাজার সূত্রে জানা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে দাম বেড়েছে পোলাও চাল, চিনি, সেমাইয়ের। এছাড়াও সবজি বাজারে ঊর্ধ্বমুখী শসা, লেবুসহ গাজরের দাম। তবে দাম কমেছে বেগুন, চিচিঙা, ঢ্যাঁড়শসহ অন্যান্য সবজির। সবজি বিক্রেতা নাজমুল হাসান বলেন, এখন শুধু শসা আর লেবু ছাড়া প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কম। ঢাকা শহরে লোকজন কমে যাওয়ায় আমাদের বেচাকেনাও অনেক কম। তাই বাধ্য হয়েই কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লাউ বিক্রি করছি ৬০ টাকা পিস, যা আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা করে। শসা ১০০ টাকা কেজি, যা গত দুই দিন আগেও ছিল ৬০-৭০ টাকা। ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করছি ৩০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, যা আগে বিক্রি করেছি ৫০-৬০ টাকা। চিচিঙা ৩০ টাকা এবং কচুর লতি বিক্রি করেছি ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা। এছাড়াও বরবটির কেজি ৫০ টাকা, লেবুর হালি ২৫-৩০ টাকা, পটোল ৫০-৬০ টাকা, করলা ৫০ টাকা এবং মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ঈদকে কেন্দ্র করে সবজির দাম বাড়বে কিনা জানতে চাইলে নাজমুল আরও বলেন, সব সবজির দাম এখন কম। ঈদ উপলক্ষ্যে হয়ত দামটা আরও কমবে। তবে শুধু সালাদের আইটেমগুলোর মধ্যে শসা ও টমেটোর দাম একটু বাড়তে পারে। আরেক সবজি বিক্রেতা নূর আলম বলেন, ঢাকায় লোকজন না থাকায় তরকারির দাম অনেক কমে গেছে। আমরাও অনেকটা বিপাকে পড়ে গেছি। সবাই নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। যে কারণে ক্রেতা অনেক কম। সকাল থেকে বসে আছি, হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন এসেছেন। এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে পোলাও চাল, চিনি, সেমাইয়ের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে এসব পণ্যের দাম প্রতিদিনই ১/২ টাকা করে বাড়ছে। ঈদের পর হয়ত আবার এগুলোর দাম কমে আসবে। বাড্ডা এলাকার ব্যবসায়ী মো. রমজান মিয়া বলেন, বর্তমান বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি করে। এছাড়াও খোলা চালের মধ্যে চিনিগুড়া পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, সোনারতরী পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। বাকি সব চালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে চিনির দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজি করে। এমনকি প্রতি সপ্তাহেই ১/২ টাকা করে বাড়ছে চিনির দাম। মাঝারি মানের বনফুলের ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা প্যাকেট। প্রাণ, ওয়েল ফুডের ২০০ গ্রাম লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা প্যাকেট। দ্রব্যমূল্যের বাজার প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, রোজা শেষ পর্যায়ে তাই ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। শক্তভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে এমনটা হতো না। এমনিতেই মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ, এরমধ্যে যদি আবার ব্যবসায়ীরা সুবিধা নেয়, তাহলে তো আরও সমস্যা। তিনি বলেন, সামনে ঈদ তাই দামের দিকে তাকিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে। সেমাই-চিনিসহ মোটামুটি ঈদের বাজার কমপ্লিট। তবে দামটা সাধ্যের মধ্যে হলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তদের জন্য খুবই ভালো হতো।