প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য আর নেই। গত রোববার রাতে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
তিনি শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি বেশ কয়েক দিন ধরে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শনিবার সকালে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। রোববার রাত ১২টা ২৫ মিনিটে পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের চিকিৎসক লেলিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সঙ্গে প্রায় একই সময় পঙ্কজ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলা দায়ের করে। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছাকাছি সেলের তাকে রাখা হয়। পঙ্কজ ভট্টাচার্য মহান মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। সারা জীবন তিনি বাম রাজনীতির আদর্শ ধারণ করেছেন। সর্বশেষ তিনি ঐক্য ন্যাপ নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্য ন্যাপের সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বার্তায় শেখ হাসিনা প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এছাড়া তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।