এইচএসসি পরীক্ষা আগস্টের মাঝামাঝি শুরুর পরিকল্পনা
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমরা আশা করছি, আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমরা হয়তো পরীক্ষাটি নিতে পারব। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসেই হচ্ছে। কিন্তু, যেহেতু পূর্ণ নম্বরে, পূর্ণ সময়ে সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে, তাই আমরা আমাদের নির্বাচনি পরীক্ষা যেটি হওয়ার কথা ছিল সেটিকে একটু পিছিয়ে ৩০ মে করে দিয়েছি। আমরা আশা করছি, আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমরা হয়তো পরীক্ষাটি নিতে পারব।
চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা জুলাইয়ে নেয়ার পরিকল্পনা থাকলেও সিলেবাস শেষ না হওয়ায় তা পিছিয়ে দেয়া হয়।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার গত ১২ এপ্রিল বলেছিলেন, পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে আগস্টে নেয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। তবে দিন-তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।
অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাস শেষ হয়নি। ফলে এইচএসির নির্বাচনি পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা জুলাইয়ের পরিবর্তে এক মাস পিছিয়ে আগস্টে নেয়া হবে। এ লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। চলতি বছর ১৫ মাস সরাসরি ক্লাস নেয়ার সুযোগ পেয়েছে কলেজগুলো। এর মধ্যে অনেক কলেজ সিলেবাস শেষ করতে পারেনি।
২০২৪ সালে পরীক্ষা নিয়ে শিগগিরই বৈঠক হবে জানিয়ে দীপু মনি মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব যে তাদের জন্যও আমরা পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে যাব কি না। আমরা চাই, পরীক্ষার সময়টাকে যতদূর সম্ভব এগিয়ে আনা যায়।
২০১০ সাল থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসএসসি এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে আসছিল। তবে তাতে বাদ সাধে কোভিড মহামারি। ২০২০ সালে পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষার্থীদের সনদ দেয়া হয়। এরপর ২০২১ ও ২০২২ সালে পরীক্ষা নেয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে।
২০২২ সালের পরীক্ষা এগিয়ে আনার পরিকল্পনা হলেও বন্যার কারণে তা পিছিয়ে যায়, শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা হয় নভেম্বরে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত হলে দ্রুত ব্যবস্থা : কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
ফায়ার সার্ভিস থেকে ২৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ বলে তালিকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ভবন চিহ্নিত হচ্ছে। যেখানেই আমাদের কোনো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হবে, যতো দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেব। কোনো ভবন হয়তো নতুন করে তৈরি করতে হবে, আবার কোনোটা মেরামত করতে হতে পারে। যেখানে নতুন করতে হবে সেখানে নতুন করব। কোনোভাবেই জীবন নিয়ে ঝুঁকি নেয়ার সুযোগ নেই।
ভবনগুলো নির্মাণের সময় আইন না মানার বিষয়ে দীপু মনি বলেন, যে দেশে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ২১ বছরে কোনো মামলা করা যায়নি। দেশটা এমন বিনা বিচারের দেশে পরিণত হয়েছিল। সেই দেশে তো বিল্ডিং কোড মানা অনেক পরের কথা। কাজেই আমাদের অনেক ভবনই হয়তো এমন সময়ে তৈরি, যখন কেউ আইনই মানেনি। এ দেশটা তো তখন আইনের শাসনের দেশ ছিল না। অপশাসনে জর্জরিত একটা দেশ ছিল। আজকে সেই দেশটা একটা গণতান্ত্রিক দেশ।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, গত সোমবার আমরা গণতন্ত্র চর্চার একটা অসামান্য সাফল্যের অংশ দেখতে পেয়েছি। আমাদের বিদায়ী রাষ্ট্রপতি সফলভাবে দুটি মেয়াদ সম্পন্ন করে বিদায় নিলেন। কি সুন্দর বিদায়। নতুন রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। এখন আমরা গণতন্ত্রের চর্চা যেমন দেখতে পাচ্ছি, তেমনি অন্যান্য ক্ষেত্রেও আইনের প্রয়োগ দেখতে পাচ্ছি।