ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গ্যাস লিকেজ, উদ্বিগ্ন নগরবাসী

আতঙ্কিত না হতে বলেছে তিতাস গ্যাস
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গ্যাস লিকেজ, উদ্বিগ্ন নগরবাসী

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস লিকেজের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ফোন করেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাদিক টিম বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে লিকেজের বিষয়টি দেখার জন্য। তাৎক্ষণিক কোনো দুর্ঘটনা হলে তা সামাল দিতে রাতভর টহল দিয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়।

গত সোমবার রাত ১০টার পর থেকে রাজধানীর মগবাজার, ইস্কাটন, খিলগাঁও, রামপুরা ও মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে গ্যাস লিকেজের অভিযোগ করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ফোন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক। তিনি বলেন, রাত ১০টার পর থেকে রাজধানীর খিলগাঁও রামপুরাসহ বলতে গেলে সারা রাজধানী থেকে আমাদের কাছে গ্যাস লিকেজের ফোন আসতে থাকে। এসব ফোন পাওয়ার পর আমাদের দুটি টিম রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় লিকেজের বিষয়টি দেখতে যায়। আমাদের টিম প্রাথমিকভাবে জানতে পারে গ্যাসের অতিরিক্ত চাপের কারণে বিভিন্ন জায়গায় লিকেজ হচ্ছে। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

এদিকে গ্যাস লিকেজ নিয়ে ফেইসবুকে অনেকে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছে। অনেক নেটিজেন পোস্ট দিয়ে লিখছেন তাদের এলাকায় গ্যাসের গন্ধে থাকা যাচ্ছে না। প্রচুর পরিমাণে গ্যাস লিকেজ হচ্ছে এবং তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিংও করা হচ্ছে বলে পোস্টে জানানো হয়। আতঙ্কিত মানুষজন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ও ফায়ার সার্ভিস এ কল করে সহযোগিতা চেয়েছে।

এ বিষয়ে তিতাসের জিএম অপারেশন সেলিম মিয়া বলেন, গ্যাস লিকেজের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। ধারণা করা হচ্ছে, শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় লাইনে ওভার ফ্লো বা চাপ বেড়ে গেছে, যার গন্ধটাই বাইরে ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে রাতেই কাজ শুরু করে তিতাস। পরে গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এদিকে তিতাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- গত ২৪ এপ্রিল, ০২০২৩ তারিখ রাত ১০:৩০ হতে ১১:০০ ঘটিকার মধ্যে ঢাকা শহরের কয়েকটি এলাকা যেমন : রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী, বেইলি রোড ইত্যাদি হতে গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার অভিযোগ আসে। অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে তিতাসের ১৪টি ইমার্জেন্সি টিম ওই সমস্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ প্রদান করে। একই সাথে যেসব উরংঃৎরপঃ জবমঁষধঃরহম ঝঃধঃরড়হ (উজঝ) এর মাধ্যমে ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে থাকে, সে সকল ডিআরএস থেকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে শিল্পকারখানাগুলো বন্ধ থাকা গ্যাসলাইনে চৎবংংঁৎব পূর্বের তুলনায় বেশি থাকায় এবং ঢাকা শহরের গ্যাসের চাহিদা কমে গিয়ে সরবরাহ লাইনে গ্যাসের চাপ বেশি থাকে। বর্তমানে ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে নির্বিঘ্নে গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে। এদিকে গত সোমবার মধ্যরাতে মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড পেইজে এক পোস্টে জানানো হয়, ‘ঈদে শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায়, সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় (ওভার-ফ্লো) গন্ধ বেরিয়ে আসছে। তিতাসের জরুরি ও টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।’ এ ছাড়াও যেকোনো বিষয়ে তিতাস গ্যাসের হটলাইন ১৬৪৯৬ নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

গ্যাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা হলো যেভাবে

বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ লাইনে চাপ স্বাভাবিক রয়েছে এবং গ্যাসের সরবরাহ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে নির্বিঘ্নে গ্যাস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

গতকাল মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিনের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঢাকার রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী, বেইলি রোডসহ কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তিতাস গ্যাসের ১৪টি ইমার্জেন্সি টিম এসব এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়। একই সঙ্গে যে সমস্ত জেলা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (ডিআরএস) মাধ্যমে ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে থাকে, সে সব ডিআরএস থেকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হয়। তাই দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকাসহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস পাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ লাইনে চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ লাইনে চাপ স্বাভাবিক রয়েছে এবং গ্যাসের সরবরাহ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে নির্বিঘ্নে গ্যাস ও গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত