ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে সাভারের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। ঈদের আনন্দকে বহুগুণ রাঙিয়ে তুলতে বর্ণাঢ্য সাজে সেজেছে এসব বিনোদনকেন্দ্র। পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষ্যে এসব পার্কগুলোতে স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন অফার প্যাকেজ থাকায় বিভিন্ন বয়সি মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ঈদের চতুর্থ দিন সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় থিমপার্ক ফ্যান্টাসি কিংডমে গিয়ে চোখে পড়ে হাজারো দর্শনার্থীদের সমাগম। বিশ্বমানের আদলে গড়া উত্তেজনাকর বেশ কিছু রাইড নিয়ে সাজানো পার্কটি বিনোদন পিপাসু যে কোনো বয়সি মানুষের জন্য জুতসই। এখানে আসা নানা বয়সি বিনোদনপ্রেমীরা উৎসবে মেতে উঠেছে তাদের ঈদ আনন্দে। কেউ চড়েছে রোমাঞ্চকর রোলার কোস্টারে, কেউ ম্যাজিক কার্পেটে আর বাচ্চারা চালাচ্ছে রেসিংকার আবার অনেকে উঠেছে ট্রেনে। তবে তরুণদের মূল আকর্ষণ ওয়াটার কিংডমে। সেখানে তারা ডিজে গানের তালে নীল জলের কৃত্রিম ঢেউয়ের সঙ্গে গা ভাসিয়েছেন। আবার কৃত্রিম পাহাড়ের ঝর্ণায় পানিতে আনন্দে মেতেছেন জুটি বেঁধে আসা তরুণ-তরুণীরা। এ সময় প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি আর স্মৃতির মুহূর্তগুলো মুঠোফোনে ধরে রাখতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা। এদিকে পার্কে ঘুরে খিদে পেলে খাওয়া-দাওয়ার জন্য রয়েছে ছোট ছোট ফুড কোর্টসহ তিন তারকা মানের ক্যাফে আশুলিয়া, লিয়া রেস্তোরাঁ ও ওয়াটার ক্যাফে। ফ্যান্টাসি কিংডমে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা আখলাকুর রহমান বলেন, ‘সারা বছর অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় পরিবারকে তেমন একটা সময় দিতে পারি না। তাই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে ফ্যান্টাসি কিংডমে আসা। এদের সবগুলো রাইডই দারুণ রোমাঞ্চকর। তবে এই গরমে ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের ইভেন্টটা একদম দুর্দান্ত। টাঙ্গাইল থেকে ঘুরতে আসা কলেজছাত্র মাহিম জানান, আমরা সাত বন্ধু মিলে এখানে ঘুরতে এসেছি। আমরা কম্বো প্যাকেজ নিয়েছিলাম এতে করে আমরা সবগুলো রাইডই উপভোগ করতে পেরেছি। প্রত্যেকটা রাইডই আমাদের কাছে অসাধারণ লেগেছে। এতদূর থেকে এখানে আসাটা সার্থক। আমাদের মতো তরুণদের জন্য এই জায়গাটা বেস্ট। ফ্যান্টাসি কিংডমের হেড অব মিডিয়া মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজন থাকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য। এবারও ব্যতিক্রম নয়। ডান্স, ডিজে শো। বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। প্যাকেজ ভেদে খাওয়া-দাওয়াসহ সব রাইডও নিতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া নিয়ম মেনে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা খরচে বেড়ানোর সুযোগ আছে এই পার্কে। তবে সংস্থাগুলোতে আবেদনের পর যাচাই-বাছাইয়ের পর তারা এই সুযোগটি নিতে পারবেন। এছাড়া সবচেয়ে বেশি আমরা নিরাপত্তার বিষয়টি বরাবরই জোর দিয়ে থাকি। কারণ পরিবার বা বিনোদনপ্রেমীরা এসে যাতে কোনোরকম নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন। ফলে নিজস্ব আনসার সদস্য ছাড়াও পুলিশসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকেন।
এদিকে শুধু ফ্যান্টাসি কিংডমই নয়; সাভারের জিরানী এলাকায় অবস্থিত আরেক থিমপার্ক নন্দন পার্ক, ধামরাইয়ের কুল্লায় অবস্থিত আলাদিনস পার্ক, আশুলিয়ার চক্রবর্তীর মনপুরা পার্ক, সাভারের মিনি অরণ্যালয় ও জাতীয় স্মৃতিসৌধেও রয়েছে দর্শনার্থীদের ঢল।