ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৫৭ মরদেহ ভেসে এলো লিবিয়া উপকূলে

৫৭ মরদেহ ভেসে এলো লিবিয়া উপকূলে

লিবিয়ার পশ্চিমের দুটি শহরের উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ৫৭ জন মারা গেছে। গতকাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীপ্রত্যাশী দুটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর পশ্চিম লিবিয়ার দুটি শহরের উপকূলে অন্তত ৫৭ মরদেহ ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কোস্টগার্ড কর্মকর্তা এবং একজন সাহায্যকর্মী।

নৌকাডুবি থেকে বেঁচে ফেরা মিসর থেকে আসা বাসসাম মাহমুদ জানান, গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ২টায় ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করা নৌকাগুলোর একটিতে ৮০ জনের মতো যাত্রী ছিল।

বাসসাম আরাে বলেন, নৌকা ডুবে যেতে থাকলে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। তা সত্ত্বেও নৌকার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি নৌকা থামাতে রাজি হননি।

‘আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করছিলাম যে কেউ একজন এসে আমাদের উদ্ধার করবে। অনেকে আমার সামনে পানিতে মারা যাচ্ছিল। দৃশ্যটি ছিল খুবই ভয়ংকর।

কোস্ট গার্ড কর্মকর্তা ফাতি আল-জায়ানি জানান, পূর্ব ত্রিপোলির কারাবুল্লি থেকে ১ শিশুসহ ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা পাকিস্তান, সিরিয়া, তিউনিসিয়া ও মিশর থেকে এসেছিলেন।

পশ্চিম ত্রিপোলির সাবরাথায় অবস্থানরত রেড ক্রিসেন্টের এক ত্রাণকর্মী জানান, তারা গত ছয় দিনে সমুদ্রতট থেকে ৪৬টি মরদেহ উদ্ধার করেছেন। মৃতদের সবাই একই নৌকার যাত্রী ও অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী। সামনের দিনগুলোয় আরো মরদেহ ভেসে আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই ত্রাণকর্মী।

চলতি মাসে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ৪৪১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থী ভূমধ্যসাগরের মধ্যদিয়ে উত্তর আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে মারা গেছে। গত ৬ বছরে, ৩ মাসের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। ২০১১ সালে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সমর্থনপুষ্ট বিরোধী একটি গোষ্ঠীর হাতে উৎখাত হন স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি। এর প্রায় এক দশক পর আফ্রিকার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সমুদ্র পেরিয়ে ইউরোপ যাত্রার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয় লিবিয়া। তবে সম্প্রতি বিদেশযাত্রার কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে লিবিয়াকেও পেছনে ফেলেছে তিউনিসিয়া।

ইতালি তিউনিসিয়াকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য অর্থ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দেশটিতে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা অবসানে আলোচনা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এমন প্রস্তাব দেয় ইতালি।

উল্লেখ্য, গত সোমবার উত্তাল সাগরে ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে ৩৭২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আটক করেছে তিউনিসিয়া কোস্টগার্ড। এর মধ্যে বাংলাদেশিও ছিল। রাজধানী তিউনিস থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের বন্দর নগরী স্ফ্যাক্সোর উপকূলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত