সুসংবাদ প্রতিদিন

মেহেরপুরে ৪০০ টন লিচু উৎপাদনের আশা

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

মেহেরপুর জেলায় স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়া মোজাফ্ফর জাতের লিচু স্বাদে গন্ধে ভরা। স্থানীয় মোজাফ্ফর জাতেরসহ চায়না-৩, বোম্বাই ইত্যাদি জাতের লিচু মিলে জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। প্রাকৃতিক কোনো ধরনের দুর্যোগ না হলে ৪০০ টন লিচু উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা। আমণ্ডকাঁঠালের পাশাপাশি মেহেরপুরের লিচু সুস্বাদু। চাহিদাও ভালো। ভৌগোলিক কারণে মেহেরপুরের লিচু অন্য জেলার আগেই বাজারজাত করা যায়। দাম ভালো পাবার কারণে ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে লিচু চাষ। মেহেরপুরের লিচুর কদর হিমসাগর আমের মতোই। লিচু ক্ষণকালীন ফল। তবে আগাম উৎপাদন ও অধিক দামের কারণে লিচু চাষে কৃষকরা অধিক উৎসাহী হয়ে পড়েছে। এই জেলায় উৎপাদিত লিচু দেশি ও আঁটি মোজাফ্ফর জাতের (গুঁটি লিচুও বলা হয়ে থাকে) চাষ আছে। তবে প্রখ্যাত লিচুর মধ্যে আতা বোম্বাই সর্বশ্রেষ্ঠ। কারণ মাংসল, রসালো, সুমিষ্ট ও ছোট বিচির ও টকটকে লাল এই লিচু বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ লিচুর অন্যতম। প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে কেউ কেউ বাড়ির আঙিনায় শখের বসে চাষ করে। এই লিচুর চাষ বর্তমানে সম্প্রসারিত হয়েছে। উদ্যান উন্নয়ন বিভাগ থেকে টিএস-৪ ও চায়না ১৪ প্রজাতির লিচু এখন ব্যাপকভাবে বাগান তৈরি হয়েছে। এগুলোও উন্নত জাত এবং বোম্বাই লিচু হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। আর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে উঠবে মোজাফ্ফর জাতের লিচু। এর দিন ১৫ পরই বোম্বাই লিচু পাকা ধরবে এবং বাজারে পাওয়া যাবে। মেহেরপুরের বিভিন্ন লিচুবাগান ঘুরে দেখা গেছে, লিচুর ভারে ডাল নুইয়ে পড়েছে। জেলা শহরের নতুনপাড়ার লিচু চাষি হেকমত আলী জানান, তার ৫ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান। লিচুগাছে ফুল আসার আগেই গত জানুয়ারি মাসে ৫ লাখ টাকায় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বাগান। লিচু বাগান ক্রেতা মাবুদ আলী জানান, তিনি তিনটি লিচুবাগান কিনেছেন প্রায় ৫ লাখ টাকায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে অন্তত ৮ লাখ টাকার কেনাবেচা হবে। তিনি জানান, এই একটি মাত্র ফল এক মাস সময় যত্ন করতে হয়। লিচুর বড় শত্রু বাদুড় আর চামচিকা। লিচুতে রং ধরলেই এক রাতেই চামচিকাতে লিচু কেটে নষ্ট করে দেবে। এজন্য রাত জেগে বাদুড় চামচিকা প্রতিরোধ করতে হয়। অতিরিক্ত তাপদাহও লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। ঝাউবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি আব্দুল মান্নান জানান, তার ৩ বিঘা জমিতে লিচুবাগান। চলতি বছরসহ পরবর্তী ২ বছরের জন্য আগাম ফল বিক্রি করে দিয়েছেন সাড়ে ৫ লাখ টাকায়। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, মেহেরপুরে ৮০ শতাংশ বাগানে আঁটি লিচু চাষ হয়। এই লিচুর বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে- আঁটি মোজাফ্ফর জাতির লিচু আগাম পাকে। সংখ্যায় ইেশ ধরে। পোকার আক্রমণ কম হয়। ফলের ৭০ শতাংশই রসালো। জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ আছে। ৪০০ টন লিচু উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩২ কোটি টাকা।