রাইজ নামের রোবট দুবাই শহরে প্রথম কাজ শুরু করে। উঁচু অট্টালিকায় সেটি লিফটের শ্যাফট বা গহ্বরে ফিটারের কাজ করছে। রোবট জানে কোন ড্রিলিং মেশিন ব্যবহার করা উচিত শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসস্থানের চাহিদাও বাড়ছে। ভবিষ্যতে দ্রুত ও সস্তায় নির্মাণ সম্ভব করতে নানান ধরনের রোবট হাত লাগাবে। তবে শ্রমিকরা উদ্বৃত্ত হবেন না, তাদের অন্য কাজে লাগানো হবে। নির্মাণ ক্ষেত্রে রোবট বিপ্লব আনতে চলেছে। ফলে নির্মাণের কাজ আরও সস্তা হয়ে উঠতে পারে। যেমন একটি রোবট নির্মাণের সাইটে গিয়ে গোটা পরিবেশ স্ক্যান করে। কোনো রোবট আবার লিফটের শ্যাফটে ঢুকে স্বাধীনভাবে কাজ করে। শিন্ডলার কোম্পানির উর্স প্যুন্টেনার বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে ড্রিলের তুলনায় আমরা এ প্রণালীর দৌলতে অনেক দ্রুত কাজ করতে পারি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের কী হবে? বিশেষ করে এমন সহজ অথচ কঠিন শারীরিক পরিশ্রমের কাজ অদূর ভবিষ্যতে রোবটের হাতে চলে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সুইজারল্যান্ডে এর মধ্যেই সেটা শুরু হয়ে গেছে। রোবট খাঁচার কাঠামোয় কাজ করছে। শেষ কয়েকটি পরীক্ষার পর এমন রোবট বাজারে আনা হবে। একেবারে নতুন ধরনের এ রোবট সঠিক মনোবৃত্তি নিয়ে কাজ করবে। ডেভেলপার হিসেবে আমার মিরইয়ান বলেন, আমাদের প্রক্রিয়ায় রোবট কাঠামোর উপর চাপ সৃষ্টি করে কনট্যাক্ট ওয়েল্ডিং করবে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে লোড সেল দিয়ে এক ধরনের ফোর্স অ্যালগোরিদম চলে, যা নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা যায়। মানুষের তুলনায় দ্রুত বা ভালো কাজ করা একেবারেই মূল উদ্দেশ্য নয়। ফর্ম বা আকার স্থির করার ক্ষেত্রে নমনীয়ভাবে প্রয়োজন মেটানোই আসল কথা। রাইজ নামের রোবট দুবাই শহরে প্রথম কাজ শুরু করে। উঁচু অট্টালিকায় সেটি লিফটের শ্যাফট বা গহ্বরে ফিটারের কাজ করছে। রোবট জানে কোন ড্রিলিং মেশিন ব্যবহার করা উচিত। উর্স প্যুন্টেনার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, রোবট একটি কনফিগারেশন ফাইল পায়, যার মধ্যে নির্দিষ্ট সেই গহ্বরে কাজের জন্য প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত তথ্য থাকে। রোবটকে ডাইমেনশন বা আয়তন চিনতে হবে, কোথায় কতটা গর্ত করতে হবে, সেটাও জানতে হবে। এতো সুবিধা সত্ত্বেও আপাতত হাতে গোনা কয়েকটি রোবট বিক্রি করা হচ্ছে। গোটা বিশ্বে নির্মাণ ক্ষেত্র বেশ রক্ষণশীল। নতুন কিছু চালু করা মোটেই সহজ নয়। প্যুন্টেনার মনে করেন, এই প্রক্রিয়া ধীর হলেও অগ্রগতি ঘটছে। এমন প্রবণতা থামিয়ে রাখা সম্ভব নয়। বাজারে প্রতিনিয়ত নতুন সহায়ক প্রযুক্তি আসছে। যেমন সিলিংয়ে ড্রিলিং-এর ব্যবস্থা। যান্ত্রিক কুকুরও কাজে লাগানো হচ্ছে। রোবটের মাধ্যমে নির্মাণকাজ আরও সস্তা ও দ্রুত হয়ে উঠছে। কারণ আরও বেশি অংশ আগেই কারখানায় প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে। ম্যাককিনসি কোম্পানির ইয়ান মিশকে বলেন, “কার্যকলাপ বদলে যাবে, তবে চাকরি উধাও হয়ে যাবে না। চাহিদা এতই বেশি যে, তা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। অর্থাৎ এমন একটা সন্ধিক্ষণ এসেছে, যেখানে একদিকে ব্যয় কমানোর সুযোগ রয়েছে, অন্যদিকে নির্মাণক্ষেত্রের শ্রমিকদের রোবটদের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কাজ দেয়ায়ও সম্ভব। সত্যি বলতে কি, কারখানায় উৎপাদনের আরও আরামদায়ক কাজ করানো যেতে পারে।” রোবট কুকুর এখন ‘প্রোটোটাইপ’ পর্যায়ে রয়েছে। সেটি লেজার দিয়ে নির্মাণের সাইট স্ক্যান করে কতটা কাজ হয়েছে, কোথায় ফাঁকি মারা হয়েছে, সে সব নথিভুক্ত করতে পারে। রোবো-ডগের দাম অনেকটা বড় গাড়ির সমান। তবে নির্মাণ কোম্পানিগুলোর মতে, সেই অর্থ দ্রুত উঠে আসবে। যেমন নিরাপত্তার একটি বেড়ার অভাব চিহ্নিত করে রোবো-ডগ সতর্ক করে দিলে ক্ষতি এড়ানো যাবে। আরেকটি সুবিধা হলো মানুষের মতো রোবটের শিফটের শেষে ছুটির প্রয়োজন নেই।