তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বৃদ্ধ মাতা-পিতা ও অভিভাবকের যত্ন নেয়া সন্তান-সন্ততির সামাজিক ও আইনগত দায়িত্ব এবং অসহায়-অসুস্থ মা-বাবার ভরণ-পোষণ না দেয়া বা তাদের রাস্তায় ফেলে চলে যাওয়া দই-নীয় অপরাধ। গতকাল শনিবার রাজধানীর মিরপুরে দক্ষিণ পাইকপাড়ায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী দুপুরে বৃদ্ধাশ্রমে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রামের নিজ উপজেলা রাঙ্গুনিয়ার সাবেক শিক্ষক সেলিম মাস্টারের পাশে কিছু সময় অবস্থান করেন। এ সময় সেলিম মাস্টারের বর্তমান অবস্থা উত্তরণের জন্য সন্তানদের খুঁজে বের করতে এরইমধ্যে দেয়া নির্দেশনার কথাও তিনি জানান। আবেগাপ্লুত সেলিম মাস্টার মন্ত্রীকে জানান, আগামী নির্বাচনের সময় তিনি এলাকায় গিয়ে হাছান মাহমুদের নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিতে চান।
ড. হাছান মাহমুদ আশ্রমের অন্যান্য কক্ষ ঘুরে বাসিন্দাদের খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের হাতে উপহারসামগ্রী তুলে দেন। পরে তিনি ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার ফাউন্ডেশনে’র প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের হাতে আর্থিক সহায়তার একটি চেক প্রদান করেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মিল্টন সমাদ্দার এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের উচিত বাবা-মা যেমনই হোক, যত দিন বেঁচে থাকেন, তাদের সেবা-শুশ্রুষা, দেখা-শোনা ও সাধ্যমতো যতটুকু সম্ভব ততটাই করা। আমাদের দেশে সাধারণত মানুষ তা-ই করে থাকে এবং আমাদের সরকার এ বিষয়ে আইনও প্রণয়ন করেছে। যারা এটি করে না, তারা যেমন একদিকে সামাজিক অন্যায় করছে, অপরদিকে রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ীও তারা একটি গুরুতর অপরাধ করছে। এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।
মন্ত্রী আশ্রম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দার যে কাজটি করছেন, সেটি অনন্য অসাধারণ কাজ। আমি দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। এরইমধ্যে তাকে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি ও উৎসাহ দেয়ার জন্য যুব পুরস্কার এবং সমাজকল্যাণ পুরস্কার দেয়া হয়েছে, নানাভাবে সহায়তা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে আমরা আরো সহায়তা করব। আমি মনে করি, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরো অনেকেই এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসবেন।’
মিল্টন সমাদ্দার বলেন, ২০১৪ সালে একজন অসহায় বৃদ্ধকে নিজের বাসায় নিয়ে আসার পর থেকে মনের তাগিদে তিনি এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ১৫ জন অনাথ শিশু, ২০ জন বিশেষ শিশু-কিশোর ও ১৩৫ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সম্পূর্ণ বিনা খরচে বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত দানের মাধ্যমে পরিচালিত এই ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার হোমে’ রয়েছেন।