দিগন্তজোড়া মুগডালের আবাদে ছেয়ে গেছে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মাঠগুলো। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে মুগ ডালের আবাদ। এরইমধ্যে সব মাঠের মুগডাল পাকা শুরু হয়েছে। ডাল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান কৃষানিরা। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে মুগডালের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ফলনও ভালো হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা মাঠজুড়ে কৃষান কৃষানিরা হাসিমুখে মুগডাল সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোনো কোনো কৃষক এরইমধ্যে ডাল মাড়াই শুরু করেছে। দুমকি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ১৭১ হেক্টর জমিতে মুগডালের চাষাবাদ হয়েছে। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন মুগডাল চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। উপজেলার লেবুখালী, পাঙ্গাশিয়া, শ্রীরামপুর, আঙ্গারিয়া ও মুরাদিয়া ইউনিয়নে ব্যাপক হারে মুগডাল চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মুগডালের ফলন ভালো হয়েছে। তবে দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় পোকায় আক্রমণ করেছিল বলে কতিপয় কৃষক জানান। উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কৃষক নুরুজ্জামান বলেন, আমি বরাবরই মুগডালের চাষাবাদ করি, এ বছরও ৩ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের মুগডালের আবাদ করেছি। পোকার আক্রমণে কিছুটা ক্ষতি হলেও বৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে তা পুষিয়ে গেছে। মুরাদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মুরাদিয়ার কৃষক কালাম চৌকিদার বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে ২ একর ৩০ শতাংশ জমিতে মুগডালের চাষাবাদ করেছিলাম। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে লোকের অভাবে মুগডাল তোলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শাহনাজ বেগম নামের এক নারী শ্রমিক মুগডাল তুলতে এসে ক্ষেত থেকে বলেন, আমার নিজের জমি নেই, অন্যের ক্ষেতে ৪ ভাগে ডাল তুলছি। এ রকম আমার মতো অনেকেই এ মৌসুমে ডাল তুলে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তৎপরতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবছর মুগডালের চাষাবাদ বেশি হয়েছে। সরকারের কৃষি প্রণোদনায় বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের মুগডাল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর কৃষকরা মুগডালের আবাদে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।