হাওরে এখন পর্যন্ত ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
এছাড়া চলতি বছর বোরোতে রেকর্ড ২ কোটি ২০ লাখ টনের মতো চাল উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। গতকাল সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোরো ধান নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ লাখ ৭৬ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে। এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ১৫ লাখ মেট্রিক টন চাল। মাঠে ধানের অবস্থা ভালো, হাওরের ধানও ভালোভাবে কাটা গেছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১০ লাখ টন বেশি চাল উৎপাদন হতে পারে।
তিনি বলেন, মেশিনে ধান কাটায় হাওরের ধান দ্রুত কাটা সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওরের ৭টি জেলায় ৩৮০০ কম্বাইন হারভেস্টার ও ৬৭০টি রিপার দিয়ে ধান কাটা চলছে। পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকের মজুরি এখন বেশি। তবে, শ্রমিক সংকট রয়েছে। মেশিনে ধান কাটায় দ্রুততার সঙ্গে কাটা যাচ্ছে। একইসঙ্গে খরচ কম হচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় কৃষকরা এর সুফল পাচ্ছে।
ধানের দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। ধান কাটার পরই ক্ষেতে বসেই ৯০০ থেকে ১১০০-১২০০ টাকা মণ দরে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে পারছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, অনেকেই কৃষির উন্নয়নকে উন্নয়ন মনে করেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধের অনেকেই মনে করেন উন্নয়ন মানে শুধু রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, স্কুল-কলেজের বিল্ডিং বানানো। বিগত ১৪ বছরে কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে আমরা হাওরের কৃষককে ধান কাটার যন্ত্র দিচ্ছি অর্থাৎ একটা যন্ত্রের দাম ২৮ লাখ টাকা হলে ২০ লাখ টাকা সরকার আর কৃষক মাত্র ৮ লাখ টাকা দিচ্ছে। এটি একটি বিরাট উন্নয়ন।
তিনি জানান, হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবছর বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে। আর এই ৭টি জেলায় মোট বোরো আবাদ হয়েছে (হাওর ও হাওরের বাইরে উচুঁ জমি মিলে) ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪০ লাখ টন চাল।
এখন পর্যন্ত হাওরে ৯০ ভাগ বোরো ধান কর্তনের মধ্যে সিলেটে ৯১ ভাগ, মৌলভীবাজারে ৯৭ ভাগ, হবিগঞ্জে ৮০ ভাগ, সুনামগঞ্জে ৯৬ ভাগ, কিশোরগঞ্জে ৮০ ভাগ, নেত্রকোনায় ৯৬ ভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯২ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।