ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেতে ফায়ার ডিজির প্রস্তাব

ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেতে ফায়ার ডিজির প্রস্তাব

ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে জলাশয়গুলো রক্ষা করতে হবে বলে মনে করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের জরিপে শতাধিক পুকুর থাকলেও রাজধানীতে বর্তমানে পুকুরের সংখ্যা ২৯টিতে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানান, পুকুরগুলোর ওপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বারবার অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ: প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক নগর সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পাল। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন।

এসময় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক তাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পুকুরগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদে পরিণত হয়েছে। জমির মালিকরা যে যার মতো পুকুর ভরাট করে ফেলবে এমনটা হতে পারে না। একটা পুকুর আশপাশের মানুষের জীবন মাল রক্ষা করছে।

ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে গিয়ে নানা অসুবিধার মধ্যে পড়ে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, মার্কেটগুলোতে অধিক দোকান বসানোর প্রবণতা দেখা দেয়। যা বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অন্য অনেক সেবা নিশ্চিতে পিছিয়ে থাকে। যেখান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে আমাদের ক্রমাগত জলাশয় কমছে। আমাদের মার্কেটগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রাংশের অভাব রয়েছে। এর মধ্যে সস্তায় যন্ত্রাংশ কেনার প্রবণতা রয়েছে। অগ্নিনির্বাপক স্টোর রুম নেই।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক বলেন, ঝুঁকি থাকার পরও মার্কেট মালিক কিংবা দোকানিদের সহযোগিতার মানসিকতা থাকে না বা আমরা পাশে পাই না। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও মার্কেটগুলো শনাক্তে জরিপ প্রয়োজন। একটা জরিপ করতে এক বছরের বেশি সময় লেগে যায়। তাই আমরা চিন্তা করছি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তিন মাসের মধ্যে জরিপ করার।

এদিকে গতকাল অপর এক অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেতে অগ্নিনির্বাপণ আইন-২০০৩ সংস্কারের প্রস্তাব করা হবে।

তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপণ আইন-২০০৩ অনুযায়ী আমরা নোটিশ ও মামলা দিতে পারি। এ আইনের আদলে সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর। এটাকে অবশ্যই সংস্কার করা প্রয়োজন আছে, এ কাজটি হাতে নেব।

গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) এক বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

এসময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিল্ডিং কোডের সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণ আইন সাংঘর্ষিক। এটিও সংস্কার করা জরুরি। আমরা ছয়তলার ওপরের ভবনগুলোকে বহুতল ভবন বলি, কিন্তু রাজউক ১০ তলার উপরের ভবনগুলোকে বহুতল ভবন বলে। এ তথ্য সংস্কার করতে হবে। রাজউক কোনো ভবন তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।

২০২২ সালে যে আইন পাস হয়েছে সেটি এরই মধ্যে পুরোনো হয়ে গেছে। বিএমডিসি কোড আমাদের মডিফাই করতে হবে।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অফিসে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা করা হয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনের প্রক্রিয়ায় আছে। বিচারাধীন বিষয়ে আমি আর বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না।

তিনি বলেন, হামলায় ১৪টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি গাড়ির দাম ৮ কোটি টাকা। এসব গাড়ি নিয়েই আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত