সুসংবাদ প্রতিদিন

কুড়িগ্রামে ধরলার চরে পটোল চাষ

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

জুনের শেষ সপ্তাহে যখন ধরলার পানি বেড়ে বন্যা হবে তখন ডুবে যাবে পটোল ক্ষেত। পুরো মৌসুম পটোল বিক্রি করা হবে না, তারপরও বন্যা আসার আগে যে পরিমাণ পটোল বিক্রি হবে, তাতেই উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ লাভ হবে। আর এ আশায় ধরলার চরের শত শত কৃষক পটোল চাষ করে নিজেদের ভাগ্যবদল করেছেন বিগত কয়েক বছরে। এ বছর পটোলের বাম্পার ফলন হয়েছে। চরজুড়ে পটোলের সবুজ ক্ষেত মায়াবী হাতছানি দেয়। বাজারে পটোলের দামও মিলছে আশানুরূপ। তাই বেশি লাভের আশায় বুক বেঁধে চরের কৃষক। কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের উত্তর ও দক্ষিণ নওয়াবশ গ্রামজুড়ে ধরলা নদীর বুকে প্রায় ৬০ একর জমিকে পটোল চাষ করেছে প্রায় শতাধিক কৃষক। খামারবাড়ীর দেয়া তথ্যে চলতি খরিপ মৌসুমে ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর সবজির মধ্যে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পটোলের আবাদ হয়েছে। শীত মৌসুম চলে যাওয়ার পর বাকি মৌসুমজুড়ে পটোল বিক্রি করতে পারবেন চাষিরা। বাজারে চাহিদাও প্রচুর। এখন রমজান মাস উপলক্ষ্যে নতুন পটোলের চাহিদা বেশি। মাঠে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দাম পরলেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পটোল। ১ বিঘা জমিতে পটোল চাষ করে সব খরচ মিটিয়ে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুনাফা হয়। তাই অন্য ফসল চাষ না করে এষানকার কৃষক নিজের সঞ্চিত অর্থ ছাড়াও ঋণ নিয়ে পটোল আবাদ করছেন প্রতি বছর। পটোল চাষি আমজাদ জানান, রমজান মাসের এ সময়ে বাজারে নতুন পটোলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। গতকাল ২ হাজার টাকা মণে পাইকাররা নিয়ে গেছেন। আজ একটু দাম কমেছে। ১ হাজার ৮০০ টাকা দাম বলছে। এখনো দরাদরি চলছে। উত্তর নওয়াবশ গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, গতবার ১ একর জমিতে পটোল আবাদ করেছি। ক্ষেত তৈরি করতেই প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবার জাংলা খরচ লাগছে না। ফলে অর্ধেক খরচে পটোল লাগানো হয়েছে। এখন পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ করছি। আশা করছি ভালো দাম পাব। কিন্তু, হঠাৎ করে বৃষ্টি আর প্রচণ্ড খরার কারণে পটোলের পাতা কিছুটা লালবর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

এ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা ঘর ঘন স্প্রে করছেন ক্ষেতে। পটোল চাষি জুবায়েদ ও লিটন জানান, বৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরার কারণে পটোল ক্ষেত লালবর্ণ ধারণ করছে। নানা ধরনের ভিটামিন জাতীয় প্রয়োগ করছেন, আশা করছেন রোগ-ব্যাধি দূর হবে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চরাঞ্চলে পটোলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ-ব্যাধির কারণে উৎপাদনে যেন কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কৃষকের নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন।