সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্র ঠাকুরের জমিদারি তদারকির কাছারি বাড়ি অঙ্গণে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী জন্মজয়ন্তী উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও শাহজাদপুর উপজেলা প্রশাসন নানা আয়োজনে এ উৎসব শুরু হয়। এ উৎসব ঘিরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি বর্ণীল সাজে সাজানো হয়েছে। উৎসব ঘিরে রবীন্দ্রপ্রেমী, গবেষক ও অনুরাগীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কবি অঙ্গন। সকালে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু প্রধান অতিথি হিসেবে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। ডেপুটি স্পিকার বলেন, রবীন্দ্রনাথ আমাদের গর্ভ, আমাদের প্রাণের কবি। বঙ্গবন্ধু মনেপ্রাণে রবি কবির শিল্প দর্শন ও আদর্শকে বুকে লালন করতেন। এজন্য সবার মাঝে রবির আলো ছড়িয়ে দিতে তিনি তার লেখা গানকে জাতীয় সঙ্গীত করেছেন। আমাদের প্রত্যেকের উচিত রবি কবির দর্শন অনুসরণ করা। রবি দর্শনই আমাদের মুক্তির পথ অন্বেষণ করতে হবে। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় এমপি প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজিব কুমার সরকার, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বিপিএম (বার) পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু, পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী প্রমুখ। এদিকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগ এখানে দিনব্যাপী ‘রং তুলিতে রবীন্দ্রনাথ’ শিরোনামে দেশের খ্যাতনামা ১০ জন নবীন ও প্রবীণ চিত্রশিল্পী ক্যানভাসে চিত্রকর্ম অঙ্কন করেন। তাদের এ চিত্রকর্ম অঙ্কন এ অনুষ্ঠানকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। উদ্বোধনী পর্ব শেষে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় রবীন্দ্র সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্যানুষ্ঠানর আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত জমিদারি তদারকির জন্য এখানে মাঝে মাঝে আসতেন ও কিছু দিন করে অবস্থান করতেন। তার এই অবস্থানকালে তিনি চিত্রা, চৈতালি, সোনার তরী, নাটক বিসর্জন, ছোট গল্প পোস্ট মাস্টার, ছিন্নপত্র, গানসহ অসংখ্য লেখা এখানে বসে লিখেছেন। তার এই স্মৃতিকে অমর করে ধরে রাখতে এ কাছারি বাড়িতে তার ব্যবহৃত জিনিস ও আসবাবপত্র নিয়ে দ্বিতল ভবনে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ জাদুঘরে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থী ও ভক্ত অনুরাগীরা কবির পরশ নিয়ে থাকেন।