মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনায় বক্তারা

ড. ওয়াজেদ মিয়ার জীবনদর্শন অনুসরণ করার আহ্বান

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় গতকাল পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সকালে রংপুর জেলার পীরগঞ্জের ফতেপুরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কবরে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

ড. ওয়াজেদের জীবনদর্শন অনুসরণের আহ্বান : তরুণ প্রজন্মকে ড. ওয়াজেদের জীবনদর্শন অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রথিতযশা একজন বিজ্ঞানী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া। পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকারের নিজ নির্বাচনি এলাকা রংপুর ৬-এর অন্তর্গত পীরগঞ্জ উপজেলা ও রংপুর প্রশাসন এ আয়োজন করে।

স্পিকার বলেন, ‘ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া মেধার কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মূল্যায়িত হয়েছেন। ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন নিরহংকারী, বিনয়ী ও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সেই সঙ্গে অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব।’ রংপুর থেকে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু সালেহ মোহাম্মদ তাজিমুল ইসলাম শামীম, পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান, পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যরা।

এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের বক্তারা বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এ বিজ্ঞানী ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুরে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন, নির্লোভ, নিরহংকার মানুষের প্রতিমুর্তি। বাংলাদেশে পরমাণু গবেষণার ক্ষেত্রে রংপুরের এ কৃতিসন্তানের অবদান সবচেয়ে বেশি। বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ৭ বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

কথা-কবিতায় ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়াকে স্মরণ : কথা-কবিতায় ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়াকে স্মরণ করেছে বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হলে পাঠাগারের পক্ষ থেকে এ আয়োজন করা হয়। স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

আমাদের রংপুর ব্যুরো অফিস জানিয়েছে, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রসিদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফা সালোয়া ডিনা, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক ড. চিত্র লেখা নাজনীন, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সায়াদত হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাসেমসহ পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ, ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে কবর জিয়ারত ও দোয়া করা হয়। এছাড়া এদিন বিভিন্ন সময়ে জেলা, মহানগর ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতিচারণ, মিলাদ মাহফিল ও গরিবদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। ২০০৯ সালের ৯ মে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া মৃত্যুবরণ করেন।