ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবে না বিএনপি

বললেন ফখরুল
নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবে না বিএনপি

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নাকচ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে দেয়া কথা রাখা হয়নি। এখন ওবায়দুল কাদেরের কথায় আস্থা রাখার মানে হয় না।

সরকার নির্বাচন নিয়ে পুরোনো খেলা শুরু করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, তারা সিটি নির্বাচনে না গেলেও নগরে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে দ্রুত রায় দিতে একটি তালিকা করার কথাও জানতে পেরেছেন তারা।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরতে গতকাল মঙ্গলবার গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির অংশ নেয়ার সুযোগ আছে কি না, এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি যে বক্তব্য রাখেন, তার জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, আপনারা কি বিশ্বাস করেন? ২০১৮ সালে শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে আমরা তার সঙ্গে সংলাপে বসেছিলাম। সেই সংলাপে যে সমস্ত কথা তিনি দিয়েছিলেন সেগুলোর একটাও তারা রক্ষা করেননি।

সুতরাং ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় আস্থা রাখা, বিশ্বাস করা- এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না। এগুলোকে আমি মনে করি, এটা আরেকটি চক্রান্ত জনগণকে বিভ্রান্ত করার। তারা বলবে যে, এই তো আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, ওরা শুনছে না, যাচ্ছে না।

দুই দিন আগে নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে অংশ নেয়ার প্রস্তাব বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইতিবাচক সাড়া দেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফখরুল দাবি করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সেই প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।

তিনি বলেন, তারা যেভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফলাফলটাকে তাদের পক্ষে নিয়েছিল, একই কায়দায় বিরোধীদলকে সম্পূর্ণভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য তারা নানা রকম তৎপরতা শুরু করেছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর রায় দিতে তালিকা করেছে বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। আইন মন্ত্রণালয় থেকে ওই তালিকা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

সারা দেশে বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নামে ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৩টির বেশি মামলা করার অভিযোগ আনেন ফখরুল। তিনি বলেন, এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ৩৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮১ জনের বেশি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২ হাজার ৮৩০টির বেশি মামলা রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

বিএনপি পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিলেও নির্বাচনি এলাকায় নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, এই ‘অবৈধ সরকারের’ অধীনের কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না।

সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, অন্যথায় রাজপথে এই দাবির ফয়সালা হবে।

ফখরুল বলেন, জনগণ এরইমধ্যে রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন মানুষ এই আন্দোলনে রাজপথে প্রাণ হারিয়েছে, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। এই আন্দোলন আরো বেগবান হবে, আরো তীব্র হবে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার বাধ্য হবে জনগণের দাবি মেনে নিতে।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন একটা ঢেউয়ের মতো। এটা কখনো উঠে, কখনো নামে।

জনগণের পরিপ্রেক্ষিত বুঝে আমাদের আন্দোলনটা করতে হয়। শিগগিরই নতুন করে কর্মসূচি জানতে পারবেন।

জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘আমরা কাউকে কোনো নালিশ করি না, আমরা কাউকে কিছু বলতে যাই না- এটা মনে রাখতে হবে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এখানে বিদেশি যেসব মিশন আছে অথবা যারা কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে রুটিন আলোচনা হয়, সেই আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত