জাল সার্টিফিকেট বিক্রি

স্বীকারোক্তি দিতে রাজি না হওয়ায় দুইজন কারাগারে

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জাল সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা) ইয়াসিন আলী ও দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির পরিচালক বুলবুল আহমেদ বিপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন দুই আসামিকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক হুমায়ুন কবির তাদের জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট তাদের পরীক্ষা করেন। তখন দুই আসামি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ৬ মে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল করিম বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়- আসামি ইয়াছিন আলী জানান, ময়মনসিংহের জাকির, রাজশাহীর পিন্টু, চট্টগ্রামের ইমনদের চাহিদা মোতাবেক সার্টিফিকেট সরবরাহ করে আসছিলেন মো. জিয়াউর রহমান। এছাড়া সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক শরীফ চৌধুরীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে বিভিন্ন লোকের নামে সার্টিফিকেট তৈরি করে এনে দেন। দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার মালিক বায়েজীদ রেজিস্ট্রার মেহেদীর সঙ্গে আলোচনা করে সার্টিফিকেট তৈরি করে এনে দেন, আইবিএআইসি ইউনিভার্সিটির পিয়ন মনির উত্তরা ও ধানমন্ডি শাখা থেকে সার্টিফিকেটের মূল কপি সংগ্রহ করেন। আমেরিকাণ্ডবাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির মালিক মুছা সরাসরি সার্টিফিকেট তৈরি করে দেন মর্মে জানান। আসামি মো. বুলবুল আহমেদ রয়েল ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে সার্টিফিকেট প্রয়োজন এমন লোকের সঙ্গে আলোচনা করে ইয়াছিন আলীর কাছে থেকে জাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে আসছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই আসামি প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে জাল-জালিয়াতি করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের সার্টিফিকেট, দাপ্তরিক কাজের জন্য জাল সার্টিফিকেট তৈরি করেন। তারা সাধারণ মানুষকে অরিজিনাল সার্টিফিকেটের কথা বলে অর্থের বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেট সরবরাহ করে আসছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পড়ালেখা না জানা ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রস্তুতকৃত ফরম ব্যবহার করে, তারা নিজেরা জাল সার্টিফিকেট প্রদান করেন। দি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড, সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়, স্টাম্পফোর্ড ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অজ্ঞাতনামা কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সিলমোহর ও স্বাক্ষর তৈরি করেন। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।