অন্যরকম
গ্রামে কোনো রাস্তা নেই তবুও সুখী তারা
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
গ্রামে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য কোনো রাস্তা নেই। চলাচলের পথও সীমিত। কিন্তু প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরা। তাই গ্রামবাসীদের মনে খেদও নেই। বরং তারা সুখী মানুষ। গ্রামে রাস্তা নেই, মানুষ চলাচল করে কীভাবে? এমন প্রশ্ন জাগতেই পারে। চলাচলের জন্য অভিনব উপায় অবলম্বন করে ওই গ্রামের বাসিন্দারা। তারা স্থান বদল করেন। এই রাস্তাহীন গ্রামকে নিয়ে জানার ও দেখার উৎসাহও কম নয় মানুষের! গ্রামটি রয়েছে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। ওভারিজসেল প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত গ্রামের নামটি গের্দুন। এই গ্রামে রাস্তা নেই। নেই যানবাহনও। যোগাযোগ মাধ্যম একমাত্র নৌকা। নৌকায় চড়েই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বা এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যান গ্রামবাসীরা। নেদারল্যান্ডসের এই গের্দুন গ্রামে প্রায় ২৫০০ পরিবারের বাস।
এত পরিবার, এত সংখ্যক বাড়ি, জনপদ থাকা সত্ত্বেও জনপথ গড়ে উঠল না। কিন্তু কেন? কেন রাস্তা নেই এই গ্রামে? রাস্তাহীন গ্রাম দেখতেই বা কেমন, প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ঘুরতে আসেন এই গ্রামে। কিন্তু গ্রামে কোনো রাস্তা না থাকায় একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম জলপথ। এখানকার মানুষের এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে নৌকা ছাড়া যাওয়ার কোনো উপায় নেই। তবে গের্দুন গ্রামে রাস্তা না থাকলেও সেতু রয়েছে। প্রায় ১৮০টি সেতু রয়েছে এই গ্রামে। এই রাস্তাহীন গ্রাম দেখতে সব থেকে বেশি ভিড় জমান পর্যটকরা। প্রতি বছর প্রায় লাখ লাখ পর্যটক যান নেদারল্যান্ডসের এই গ্রামে। চীনাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই গ্রাম।
পর্যটকদের মধ্যে তাদের সংখ্যাই বেশি। ধীরে ধীরে অন্য দেশ থেকেও পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে এই গ্রামে। বর্তমানে তা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেন এ গ্রামে কোনো রাস্তা নেই? এই গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে ছোট-বড় ফাঁপা অংশ ছিল। গ্রামের মানুষ বসবাস শুরু করার পর সেগুলো খুঁড়ে ফেলে।
ফলে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো হ্রদ তৈরি হয়। সেগুলোজুড়েই তৈরি হয় ক্যানাল রোড। গ্রামের বিভিন্ন দিকে এই ছোটো ছোটো ক্যানেল চলে গেছে। ফলে গ্রামটাও পরিণত হয়েছে ছোটো ছোটো দ্বীপে। দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু। এই গ্রামটি বিশ্বের নজরে আসে ১৯৫৮ সালে। ডাচ ফিল্মমেকার বার্ট হান্সট্রা তার কমেডি ফিল্ম ফ্যানফেয়ারের শুটিং এই গ্রামে করার পর থেকেই তা নজর কাড়ে। গ্রামের মনোরম পরিবেশ হয়ে ওঠে পর্যটনের অন্যতম ঠিকানা। এখানে রয়েছে বেশ কিছু মিউজিয়ামও। সেখানে ১০০ বছরের ইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতি শীতে গের্দুন গ্রাম হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।