ঢাকা ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি

অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর আবেদন

অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর আবেদন

সুপ্রিমকোর্টের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা অন্য বিচারপতিদের থেকে এক বছর বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী বরাবর এ আবেদন করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিমকোর্টের ৮০ জন তরুণ আইনজীবী এ আবেদন করেন। অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান, মো. বাচ্চু মিয়া, শহিদুল ইসলাম, রাজু হাওলাদার পলাশ, বাহারুল আলম, ফারজানা আক্তার ও মো. শাহেদ সিদ্দিকীসহ ৮০ জন আইনজীবী আবেদনটি করেছেন।

আবেদনে বলা হয়, বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায় হলো একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এর মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭১ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের জনগণ নিজের জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। দেশের যেসব সন্তান নিজের জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, জাতির সেসব সূর্য সন্তানকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করা হয়েছে।

গণকর্মচারী অবসর (সংশোধনী) আইন, ২০১৩ এর ৪ ‘এ’ ধারা অনুযায়ী, সব মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারী অবসরের বয়স সাধারণ গণকর্মচারী থেকে এক বছর বেশি। অর্থাৎ রাষ্ট্র সব মুক্তিযোদ্ধাকে নিজ নিজ স্থানে ও কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিলেও বিচারপতিদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা নেই। তাই তাদের ক্ষেত্রে একই মর্মে সুবিধার ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশের সংবিধানের (পঞ্চদশ সংশোধন, ২০১১) ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা বর্তমানে ৬৭ বছর। এ ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারকদের অবসরের বয়স এক বছর বেশি করার মাধ্যমে তাদেরও সম্মানিত করা যেতে পারে। আবেদনে আরো বলা হয়, সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করতে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বিচারকদের অবসরের বয়স বর্তমানে প্রযোজ্য সব বিচারকের অবসরের বয়স থেকে এক বছর বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয়। এই বয়সসীমা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং এই সম্মানটা জাতির কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫২ বছর আগে। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এমন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারক দেশ আর পাবে না। এটা হবে তাদের প্রতি আমাদের সামান্য কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।

বর্তমানে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে মাত্র একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি (বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান) কর্মরত আছেন, যার চাকরির মেয়াদ আর মাত্র কয়েক দিন আছে। এ অবস্থায় এই বিচারপতিকে যথোপযুক্ত সম্মানে ভূষিত করা রাষ্ট্রের ও জনগণের একান্ত দায়িত্ব। আমরা নতুন প্রজন্মের আইনজীবীরা স্বীকৃতিস্বরূপ তার চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত