সুসংবাদ প্রতিদিন
লিচুতে সফল আলাউদ্দিন
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
রাজবাড়ী জেলা সদরের চন্দনী ইউনিয়নের ঘোড়পালান গ্রামের ৬৪ বছর বয়সি আলাউদ্দিন শেখ। নিজের ১ একর জমিতে লিচু বাগান করে সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি। চলতি মৌসুমে তার এক একর জমিতে ১০০ লিচু গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে লিচু। প্রতিটি গাছেই প্রায় ২ হাজার পিস করে লিচু ধরেছে। উন্নত জাতের লিচুর বাগান করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি মৌসুমে রাজবাড়ী জেলার ৫ উপজেলায় ৫৪ হেক্টর জমিতে হয়েছে লিচুর আবাদ। এর মধ্যে জেলা সদরে ২০ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ৮ হেক্টর, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৫ হেক্টর, গোয়ালন্দ উপজেলায় ২ হেক্টর ও পাংশা উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করেছেন চাষিরা। যার প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ থেকে ১০ মেট্রিক টন লিচুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরেজমিন চন্দনী ইউনিয়নের লিচু চাষি আলাউদ্দিন শেখের লিচু বাগানে গিয়ে দেখা যায় তার প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ধরে আছে লাল রংয়ের পাকা টসটসে লিচু। বাগানেই এসেছেন অনেক ক্রেতা। আলাউদ্দিন শেখ বলেন, আমার এই বাগানটি এক একর জমির উপরে অবস্থিত। এ বাগানে মোজাফফর, বোম্বাই, চায়না ৩ জাতের একশ গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন হয়েছে। আনুমানিক হিসেবে প্রতিটি গাছেই ২ হাজার পিস লিচু ধরেছে। বাগান থেকে আমি ব্যাপারীর কাছে ১ হাজার পিস লিচু ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর খুচরা পর্যায়ের হিসেবে ১শ পিস লিচুর ওজন প্রায় ২ কেজির মতো। চলতি মে মাসের ১ তারিখ থেকে গাছের লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। লিচু চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। আমার সফলতা দেখে এই গ্রামের অনেকেই লিচুর বাগান করেছেন। বাগানে লিচু কিনতে আসা ক্রেতা মতিন বিশ্বাস বলেন, আগে বাজার থেকে লিচু কিনতাম। সেগুলোতে অনেক সময়ে পোকা থাকত। এখন আমাদের এখানে স্থানীয় অনেক লিচুর বাগান হয়েছে। বাগানে এসে সরাসরি লিচু ক্রয় করছি। রাজবাড়ী জেলার বাগনের লিচুগুলো অনেক স্বাদ। দামও মোটামুটি হাতের নাগালে। আমরা এখন ভালো মানের লিচু কিনতে পেরে অনেক খুশি। লিচুর ব্যাপারী আসিফ বলেন, আমরা প্রতি বছর এখন রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন গ্রামের লিচুর বাগান ধরে ক্রয় করি। সঠিক সময়ে লিচু গাছ থেকে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারসহ আশপাশের কয়েকটি জেলাতে বিক্রি করি। রাজবাড়ী জেলার লিচুর সুনাম দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক চাষিই লিচু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। সদর উপজেলা কৃষি অফিসের চন্দনী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নারায়ণ মণ্ডল বলেন, রাজবাড়ী জেলার মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। চন্দনী ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক লিচুর চাষাবাদ করেছেন। এদের মধ্যে আলাউদ্দিন শেখ অন্যতম। তিনি লিচু চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই লিচু চাষে আগ্রহী হয়েছেন। রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত লিচু চাষিদের নানাবিধ প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি, আগামীতে এই অঞ্চলে লিচুর চাষাবাদ আরও বাড়বে।