ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মোচার প্রভাবে সাগর কিছুটা উত্তাল

স্বচ্ছ আকাশ তীব্র গরম ফিরছে ফিশিং ট্রলার

স্বচ্ছ আকাশ তীব্র গরম ফিরছে ফিশিং ট্রলার

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া ‘মোচা’ বর্তমানে যে গতিতে এগোচ্ছে সেভাবে এগোলে আগামী রোববার (১৪ মে) আঘাত হানার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এজন্য কক্সবাজারসহ দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তবে এখনও পর্যন্ত কক্সবাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ‘মোচা’র প্রভাবে সাগর কিছুটা উত্তাল হলেও স্বচ্ছ আকাশ আর তীব্র দাবদাহ বিরাজ করছে। সৈকতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, তীব্র দাবদাহের পাশাপাশি সাগর উত্তাল হয়ে উঠছে। আর পর্যটকদের সতর্ক করতে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। আর পর্যটকদের হাঁটু পানির নিচে নামতে দেয়া হচ্ছে না।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোচার কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। সব উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলার উপকূলীয় এলাকার সব সাইক্লোন শেল্টার ও বিদ্যালয়সহ ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১০ লাখ ৩০ হাজার নগদ টাকা, ৪৯০ মেট্রিক টন চাল, ৭ মেট্রিক টন শুকনো খাবার, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউ টিন মজুত রাখা হয়েছে। শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামছুদ্দৌজা নয়ন জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি শরনার্থী ক্যাম্প রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে শরনার্থী ক্যাম্পগুলোতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল সকালে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তুতি সভা হয়েছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোচার প্রভাবে আগামী এক সপ্তাহ সাগর উত্তাল থাকবে। গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছ। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোচা পরিস্থিতি সাগরে মাছ শিকার না করে উপকূলে ফিরতে শুরু করেছে কক্সবাজারের জেলেরা। এরই মধ্যে উপকূলে নোঙর করেছে ৩ হাজারের কাছাকাছি মাছ ধরার ট্রলার। গতকাল কক্সবাজার বাঁকখালী নদীর মোহনায় দেখা যায়, সাগরে মাছ শিকারে যেতে উপকূলে ট্রলারে মজুত করা হয়েছিল রসদ। সব প্রস্তুতি শেষে জেলেরাও উঠেছিলেন ট্রলারে। কিন্তু সাগরে মাছ শিকারে আর যাচ্ছে না। বাঁকখালী নদীর মোহনায় ফিরছে মাছ ধরার ট্রলারগুলো। সাগর থেকে ফিরে আসা জেলেরা বলছেন, সাগর উত্তাল হয়ে উঠছে তাই উপকূলে ফিরছেন তারা।

এফবি তরঙ্গ ট্রলারের মাঝি আবু তৈয়ব বলেন, সাগর উত্তালের পাশাপাশি বাতাস বেড়েছে। তাই মাছ শিকার না করে ২১ জেলে নিয়ে উপকূলে ফিরে আসি। আরেক জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্য উপকূলে অবস্থান। ঘূর্ণিঝড় কেটে গেলে তারপর সাগরে মাছ শিকারে যাব। কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, যে ট্রলারগুলো এখনো সাগরে মাছ শিকার করছে তারা সংকেত বাড়লে উপকূলে ফিরে আসবে। এরই মধ্যে তাদেরকে উপকূলে ফিরে আসতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজার উপকূলে নোঙর করেছে প্রায় ৩ হাজার ট্রলার। এখনো সাগরে আছে ২ হাজারের মতো ট্রলার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত