ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সহজ হবে যাত্রীসেবা

বিমানবন্দরে দুটি অ্যাপ ও সেবা উদ্বোধন

বিমানবন্দরে দুটি অ্যাপ ও সেবা উদ্বোধন

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীসেবা আরও সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস অ্যাপ’ ও ‘হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে নতুন দুটি অ্যাপস উদ্বোধন করা হয়েছে।

গত বুধবার বেলা সোয়া ১১টায় বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে আয়োজিত ‘বেবিচকের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে’ এই দুটি অ্যাপস উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

নতুন দুই অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে বিমানবন্দরে বিভিন্ন জায়গা খুঁজে পাওয়াসহ অন্যান্য সেবা পাবেন। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সহযোগিতায় ‘এইচএসআইএ ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস’ নামক এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেম ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি করে প্রাইমটেক সল্যুশন্স লিমিটেড স্পিনঅফ স্টুডিও এবং ইনোভ্যাজিওন টেকনোলজিস।

অনুষ্ঠানে মো. মাহবুব আলী বলেন, দেশের বিমান সেবা আরও সহজতর ও উন্নত করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, যা দৃশ্যমান। ক্রমেই এ দেশের পর্যটন ও বিমান খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। সরকারের প্রচেষ্টায় দ্রুত বদলে যাচ্ছে এ খাতের চিত্র। আমার বিশ্বাস এ শিল্প ২০২৪ সালে উন্নত বাংলাদেশ, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং ২০৭৫ সালে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে বহির্গামী ও আগমনী দেশি/বিদেশি সব যাত্রী এবং বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সহজ এবং আধুনিক সহায়তা দেয়ার জন্য এই অ্যাপ্লিকেশনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। অ্যাপ ব্যবহারকারীকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, স্বাস্থ্য বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ, অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি) এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সব ধরনের তথ্য ও নির্দেশনা দিয়ে যাত্রীদের সব ধরনের সহযোগিতা ও সেবা দিতে সক্ষম হবে। এটি ব্যবহারে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী বিমানবন্দরে করণীয় সব পদক্ষেপের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পেয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ অন্য কারও সহযোগিতা ছাড়াই নিজে সম্পন্ন করতে পারবে। এই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে দুটি উল্লেখযোগ্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে।

একটি অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) ইনডোর লোকেশন সার্ভিস, যা ব্যবহার করে বিমানবন্দরের ভেতরে পরবর্তীতে কোন দিক দিয়ে কোথায় পৌঁছাতে হবে তার দৃশ্যমান নির্দেশনা পাওয়া যাবে। আরেকটি ভয়েস সুবিধা ব্যবহার করে বাংলা ও ইংরেজিতে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও নির্দেশনা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ফ্লাইটের তথ্য, গন্তব্য নির্দেশিকা, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ ডেস্ক, বিমানবন্দরের তথ্যও জানা যাবে। অন্যদিকে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দরের অবস্টেকল লিমিটেশন সারফেস (ওএলএস) অন্তর্ভুক্ত এলাকার ভবন নির্মাণে কাজ করবে হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপস। বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যে কোনো জায়গায় ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে বেবিচক থেকে উচ্চতার ছাড়পত্র নিতে হয়। বেবিচকের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে এটি দেয়া হয়ে থাকে। রাজউক বা অন্য সংস্থা উচ্চতার ছাড়পত্র চাইলে এভাবে দেয়া হতো।

বিমানবন্দরের ভৌগোলিক স্থানাঙ্কভিত্তিক ভবন/স্থাপনা নির্মাণে উচ্চতর ছাড়পত্র দিতে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুশাসন দেয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে উচ্চতর ছাড়পত্র দিতে হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যাপস করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রাথমিকভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তেজগাঁও বিমানবন্দর বিবেচনায় রেখে একটি অ্যাপস প্রস্তুত করা হয়। ২০২২-এর ৩০ জুন থেকে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়। উল্লিখিত অ্যাপসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাবেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পাস সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির জন্য এভসেক আইডি নামে ডিজিটাল পাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় একই অনুষ্ঠানে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মুফিদুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত