ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

বাংলাদেশের সামুদ্রিক খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় শ্রীলঙ্কা

বাংলাদেশের সামুদ্রিক খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় শ্রীলঙ্কা

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা আরো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও আস্থা বেড়ে গেছে। পায়রা বন্দরসহ দেশের সামুদ্রিক খাতে তারা বিনিয়োগে আগ্রহী।

গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমল সিরিপালা ডি সিলভা নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় না, দুই দেশ যাতে এগিয়ে যেতে পারে; সেটিই আমাদের মূল্য লক্ষ্য। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সামুদ্রিক খাত নিয়ে যাতে আরো কাছাকাছি আসতে পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনা মহামারিসহ বৈশ্বিক সংকটের কারণে দুই দেশের মধ্যে অনেক আলোচনা স্থবির হয়ে গিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। শ্রীলঙ্কায় কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে সেই সভাটি হয়নি। শ্রীলঙ্কার সংকটে বাংলাদেশ তাদের পাশে ছিল। কলোম্বতে পরবর্তীতে যে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে; সেখানে মেরিটাইম সেক্টরের বিষয়গুলো আমরা চূড়ান্ত করতে পারব। পায়রা বন্দর পরিদর্শনে তাদের একটি প্রতিনিধি দল আসবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোস্টাল শিপিং বা উপকূলীয় নৌচলাচল চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো চূড়ান্ত হবে আগামী সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপমন্ত্রী থারাকা বালাসুরিয়া ব্লু অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এগুলো পরবর্তীতে আলোচনা হবে। শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমল সিরিপালা ডি সিলভা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না; তিনি দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নেতৃত্বে আমরা আরো এগিয়ে যাব। আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আন্তর্জাতিকমুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক কাঠামো নতুন করে সাজানো হচ্ছে। সেখানে মেরিটাইম খাতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছি। চট্টগ্রাম ও কলম্বো বন্দরের মধ্যে জাহাজ চলাচল বাড়াতে আলোচনা হয়েছে। কলম্বো বন্দরে লজিস্টিক সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে। যে কারণে এটি এখন আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরের জায়গা বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানে সহজেই বাংলাদেশের জাহাজ ভিড়তে পারবে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা তৈরি পোশাক খাতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সাড়ে ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে শ্রীলঙ্কার প্রাইভেট সেক্টর প্রস্তুত আছে। এটি বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের নতুন দৃষ্টান্ত হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ দুটি ছোট দেশ হলেও ভৌগোলিক কারণে আমাদের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কারণ, বাংলাদেশের অনেক রফতানি পণ্য কলম্বো বন্দর হয়ে যায়। আমরা এর পরিমাণ আরো বাড়াতে চাই। এতে বাংলাদেশের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, শ্রীলঙ্কার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী থারাকা বালাসুরিয়া, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এযমিরাল এম সোহায়েল, বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার নিযুক্ত হাইকমিশনার অধ্যাপক সুদর্শন সেনেভিরত্নে প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদল গতকাল ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক দেশগুলোর সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত