ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিপদাপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষণে লাল তালিকা প্রণয়ন করেছে সরকার

বললেন পরিবেশমন্ত্রী
বিপদাপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি সংরক্ষণে লাল তালিকা প্রণয়ন করেছে সরকার

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো ১০০০টি উদ্ভিদের তালিকা প্রস্তুত করেছে, যার মধ্যে ৩৯৪ প্রজাতি সংকটাপন্ন। গবেষণালব্ধ এ ফলাফল বাংলাদেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এবং বিপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির সুরক্ষায় জাতীয় নীতি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও, এটি জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন এবং CITIES রিপোর্টিং এ সহায়তা করবে। গতকাল রোববার বন অধিদপ্তরে আয়োজিত ‘ফাইনাল ডিসেমিনেশন ওয়ার্কশপ অন ন্যাশনাল রেড লিস্ট অব প্লান্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, লাল তালিকা মূল্যায়নের ফলাফল অনুযায়ী ১০০০টি উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে ০৮টি প্রাথমিকভাবে বিলুপ্ত, ৫টি মহাবিপন্ন, ১২৭টি বিপদাপন্ন, ২৬২টি সংকটাপন্ন, ৬৯টি প্রায় সংকটাপন্ন, ২৭১টি ন্যূনতম উদ্বেগজনক এবং ২৫৮টি উদ্ভিদ প্রজাতিকে তথ্যের ঘাটতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মন্ত্রী দেশের বিলুপ্তির উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মহাবিপন্ন বাঁশপাতা, ট্রায়াস অর্কিড, চালমুগড়া, বামন খেজুর উদ্ভিদ প্রজাতিসমূহ সংরক্ষণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি বলেন, এছাড়া বাংলাদেশের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং অন্যান্য বিপন্ন উদ্ভিদের অস্তিত্ব রক্ষায়ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংরক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ দেশের বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ফলাফলে প্রাপ্ত সংকটাপন্ন উদ্ভিদগুলোকে বনায়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি বন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। শাহাব উদ্দিন বলেন, এই ধরনের প্রজাতির পূর্ণ তথ্য জানার জন্য দেশের অবশিষ্ট প্রায় ৩০০০ উদ্ভিদ প্রজাতির রেড লিস্ট এসেসমেন্ট সম্পন্ন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর এই তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। সংকটাপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির সুরক্ষার জন্য বিদ্যমান আইন ও প্রবিধান মালার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলে যার যার অবস্থান থেকে সাধ্যমতো কাজ করলে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত উন্নয়নে বাংলাদেশ পৃথিবীতে রোল মডেল হিসেবে স্থান করে নেবে। বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের পরিচালক সঞ্জয় কুমার ভৌমিক প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুফল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায়, আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমীন প্রমুখ। কর্মশালায় চূড়ান্ত ফলাফলসহ মূল প্রবন্ধ যৌথভাবে উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মো. ওলিউর রহমান এবং অধ্যাপক ড. সালেহ আহমদ খান। এছাড়াও কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকম-লী ও গবেষকরা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাতারা; বিশ্ব ব্যাংক ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত