দেশজুড়ে পরিচিত ঈশ্বরদীর বোম্বাই লিচু। সবেমাত্র দেশি জাতের লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। বোম্বাই লিচু পরিপক্ব হয়ে বাজারে উঠতে সময় লাগবে আরো সপ্তাহ দুয়েক। তবে এর মধ্যে গাছে বোম্বাই লিচুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। লিচু চাষিরা বলেছেন, অতীতে কখনো এত বেশি লিচুর ফাটল দেখা দেয়নি। এ বছরে সেই লিচু নিয়েই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ঈশ্বরদীর লিচু চাষিদের। এমনিতেই এবারে অপরিপক্কতার কারণে লিচু আকারে ছোট। স্বাদও তেমন নেই।
উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ঈশ্বরদীতে ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৩১ হাজার মেট্রিক টন। ঈশ্বরদীতে সবচেয়ে বেশি লিচু উৎপাদন হয় জয়নগর ও মানিকনগর গ্রামে। জয়নগর কারিগরপাড়া গ্রামের লিচু চাষি শামসুল আলম বলেন, আমার ৩০ থেকে ৪০টি লিচুগাছ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গাছের লিচুতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বোম্বাই লিচু পাকতে এখন এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। মানিকনগর গ্রামের রহমত আলী বলেন, এ উপজেলার প্রধান অর্থকরী ফল ফসল লিচু। লিচুর ওপর নির্ভর এখানকার বহু কৃষক পরিবার। এবার লিচুর ফলন এমনিতেই কম। তার ওপর ফাটল দেখা দেয়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার সবচেয়ে বড় লিচুর হাট জয়নগর শিমুলতলার ইজারাদার আজিমউদ্দিন বলেন, ‘লিচু ফাটল ও ঝরে পড়ায় কৃষক-ব্যবসায়ীর পাশাপাশি আড়তদাররাও চিন্তিত। লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে গেলে বাজারে লিচুর আমদানি কমে যাবে। এতে আড়তদার ও ইজারাদার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, ‘তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকলে লিচুর জন্য তা খুবই ক্ষতিকর। এবার লিচুতে যখন গুটি শুরু হয়, তখন প্রায় এক মাসব্যাপী ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। এতে লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এখনো তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির উপরে রয়েছে।’ তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে লিচু ফেটে যাচ্ছে। লিচুফাটা রোধে কার্যকরী কোনো স্প্রে এ মুহূর্তে ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি না। শুধু লিচুগাছে প্রচুর পরিমাণ পানি স্প্রে করতে হবে। শেষ বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে পর্যাপ্ত পানি স্প্রে করতে হবে।