ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কার টাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন কোন মেয়র প্রার্থী

কার টাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন কোন মেয়র প্রার্থী

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে যারা লড়ছেন, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন নিজের টাকায় নির্বাচন করার হিসাব দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। আরেক আলোচিত প্রার্থী ‘বিএনপি পরিবারের’ স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি যে খরচ করছেন, তার সিংহভাগ তার সম্পত্তির ভাড়া থেকে এসেছে। কিছু অর্থ দিয়েছেন শ্বশুর, কিছু অর্থ এক চাচা। অন্য প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিনকে সিংহ ভাগ টাকা দেবেন তার মেয়ে ও স্ত্রী। আর আতাউরের টাকা সিংহভাগ আসবে দলের অনুদান থেকে। আগামী ২৫ মে ঢাকা গাজীপুর নগরে এই ভোটে মেয়র প্রার্থীরা খরচ করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা। প্রচারে নামার আগেই প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানে নির্বাচনের খরচ ও প্রাপ্তির উৎস সম্পর্কেও জানাতে হয়েছে। সেখানে এসব তথ্যের উল্লেখ আছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, কোথা থেকে তারা টাকা পাবেন, কীভাবে খরচ করবেন, সেটি সুস্পষ্টভাবে নির্বাচন কমিশনের ফরমে উল্লেখ করেছেন। নির্বাচনের পর আমরা তাদের হিসাব খতিয়ে দেখব।

কার টাকার কী উৎস

আজমত উল্লা খান জানিয়েছেন, তিনি তার খরচের সর্বোচ্চ সীমা ৩০ লাখ টাকাই খরচ করবেন। এই পরিমাণ টাকা তার হাতে আছে। নিজের পেশা ও ব্যবসা থেকে এই টাকা জমেছে তার। হলফনামায় আইন পেশা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আজমত বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকে আমানতের মুনাফা থেকে আসে আরও ৬২ হাজার ৫০৫ টাকা। কৃষি ও তৈরি পোশাকসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে সম্মানি ভাতা আসে ২৪ লাখ ৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে বছরে আয় হয় ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা। আজমত হাতে নগদ দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৬ টাকা। স্ত্রীর হাতে নগদ দেখিয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৬ টাকা।

সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের নির্বাচনে খরচের টাকা আসে তার ব্যবসা থেকে। হলফনামায় তিনি একটি পোশাক কারখানায় মালিকানার অংশীদারিত্বের তথ্য দিয়েছেন। সেখান থেকে প্রতি বছর আয় আসে। প্রার্থিতার সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায় ২০২২-২০২৩ করবর্ষে একমাত্র আয়ের খাত ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন জায়েদা। আয়কর রিটার্নের পরিসম্পদ, আয় ও ব্যয় বিবরণীতে তিনি ব্যবসার পুঁজি (মূলধনের জের) হিসেবে দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৬৬ হাজার টাকা।

অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে ২৫০০টি শেয়ার আছে তার। তবে এ থেকে আয় কত, তা জানানো হয়নি। তিনি টেবিল ঘড়ি মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাতীয় প্রার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিনও নির্বাচনে খরচ করতে চান ৩০ লাখ টাকা। এই টাকার সিংহভাগ দিচ্ছেন তার মেয়ে ও স্ত্রী।

এর মধ্যে স্ত্রী নূরজাহান তার ব্যবসা থেকে দেবেন ১০ লাখ এবং তার প্রবাসী মেয়ে নাফিয়াতুজ সাবরিনা চৌধুরী তার ব্যবসা থেকে দেবেন ১৫ লাখ টাকা। নিজের ব্যবসা থেকে বাকি ৫ লাখ খরচ করবেন লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী। সাবেক সচিব নিয়াজ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। তার নগদ টাকার পরিমাণ ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯৩৪ আর ব্যাংকে জমা ২ লাখ টাকা। স্থায়ী আমানত রয়েছে ৫৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রয়েছে ৭৫ লাখ টাকা। নিজের ৫০ ভরি স্বর্ণ ও স্ত্রীর ১০০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। তার ৩ দশমিক ৬৬ একর কৃষিজমি ও সাত বিঘা অকৃষি জমি রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলামের নগদ টাকা আছে ২৫ লাখ; আর ব্যাংকে আছে ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৮ টাকা। স্বর্ণ আছে ৫৩ ভরি।

ঘরভাড়া থেকে ১৮ লাখ ও এক চাচার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা পাবেন তিনি। বাকি টাকার মধ্যে ব্যবসায়ী শ্বশুর এনামুল হক দেবেন পাঁচ লাখ টাকা। আশরাফুল নামে একজনের কাছ থেকে ধার নেবেন দুই লাখ টাকা। মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি ‘স্বেচ্ছায় দান’ করবেন সম পরিমাণ টাকা। বিএনপি পরিবারের’ স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি লড়ছেন হাতি প্রতীক নিয়ে। এই নির্বাচনে আলোচিত আরেক প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের গাজী আতাউর রহমান ভোট করছেন মূলত দলের অনুদানের টাকায়। তিনি সবচেয়ে কম টাকা খরচ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

হাত পাখা মার্কার এই প্রার্থী নিজের সম্ভাব্য নির্বাচনী ব্যয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দিয়েছে তার দল। ভাই মোরশেদ আলম ধার দেবেন এক লাখ। বাকি তিন লাখ শিক্ষকতা পেশা থেকে তার নিজের আয়। গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ৩ লাখ টাকা, জাকের পার্টির রাজু আহমেদ ২ লাখ আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন অর রশিদ ১৬ লাখ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত