চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হয়েছে ঢাকা-১৭ আসন। শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি সিনে তারকারাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এরই মধ্যে টিভি অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক এই আসনে নির্বাচন করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এদিকে চিত্রনায়ক ওমর সানী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নাম প্রস্তাব করেন। এরপর চিত্রনায়িকা অঞ্জনা প্রস্তাব করেছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক আলমগীরের নাম। ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে অভিনেতারা আগেভাগে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দিলেও বসে নেই পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদরাও। কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তরের বেশ কয়েকজন নেতা ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন চাইতে পারেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ এ. আরাফাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদের খান ও ওয়াকিল উদ্দিন এবং দেশের একজন শীর্ষ ক্রিকেটারের নামও আলোচনায় রয়েছে।
গুলশান ও বনানী এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-১৭ আসনে কোনো অভিনেতা দেখতে চান না। তাদের মতে, মাঠের রাজনীতি করে আসা দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত, ত্যাগী, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এমন কাউকে নৌকার প্রার্থী করা হোক। কোনো অভিনেতা নয়, নেতাই হোক নৌকার মাঝি। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যাকে নৌকা দিবেন, তার পক্ষে আমরা কাজ করব।
প্রার্থিতার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল কাদের খান আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, ১৯৭৫ সালের পর থেকে বনানী এলাকায় আছি। এ এলাকার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। শুধু তা-ই নয়, বনানীতে জাতির পিতার পরিবার ও স্বজনদের সমাধি আছে, সেগুলো আমিই প্রথম সামরিক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করি। দীর্ঘ ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। সে সময় অনেকের মতো আমি জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেই রাজনীতি করেছি। আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি এর আগে তেমন কিছু চাইনি। জীবনের এই বেলায় এসে ঢাকা-১৭ আসনের মনোনয়ন চাইব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। পরে নেত্রী প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলে তা প্রত্যাহার করেছি।
প্রার্থিতার বিষয়ে ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, আমাদের এই এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন চিত্রনায়ক ফারুক। তার মৃত্যুতে এ আসন শূন্য হয়েছে। নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তবে নির্বাচনের জন্য আমি প্রস্তুত রয়েছি, নেত্রী আমাকে নৌকা দিলে নির্বাচন করব।
অন্যদিকে অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ও সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক এবং দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটার এই আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন বলে জানা গেছে। তবে ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। এদিকে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক প্রতিনিয়ত নিজেকে এই আসনের প্রার্থী বলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই এলাকার প্রয়াত এমপি একজন শিল্পী ছিলেন। সুতরাং একজন শিল্পীর জায়গায় আরেকজন এলে ভালো হয়। এ ছাড়া আমি দুই যুগ ধরে এ এলাকায় বাস করছি; স্থায়ী বাসিন্দা। ফলে এখানে আমি কর্মী বাহিনী তৈরি করেছি। এই এলাকার মানুষের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিদ্দিক বলেন, এই এলাকা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এলাকাটির জন্য তেমন কাজ করেননি। অসুস্থতার জন্য কাজ করার সুযোগ পাননি চিত্রনায়ক ফারুক ভাই। আমি মনোনয়ন পেলে তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারব।