পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে রাজশাহীর সুনাম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে এশিয়ার অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহরের সুনাম অর্জন করেছে রাজশাহী মহানগরী। পরিকল্পিত উন্নয়ন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের ব্যাপক উন্নয়নে এই সুনাম অর্জন। গত ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থপনায় গুরুত্ব দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। তার আধুনিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। রাস্তার পাশে যাতে কোনো ময়লা-আবর্জনা না থাকে সেজন্য নগরীতে ১২টি আধুনিক সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে পূর্বের ন্যায় যেখানে সেখানে দেখা মিলে না ময়লা-আবর্জনা। এদিকে নগরীতে আরো ৫টি এসটিএস নির্মাণ কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে এসটিএস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে রাসিকের।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, একটি পরিচ্ছন্ন মহানগরী গড়ে তোলার জন্য প্রথম মেয়াদে ১ জুলাই ২০০৯ সালে রাত্রীকালীন বর্জ্য আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম চালু করেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি। মহানগরবাসী এর সুফল পেয়েছে। শহর পরিছন্ন রাখতে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি, বাড়ি বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ, রাতে ও দিনে রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা, ৩০টি ওয়ার্ডে নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার ও কাদামাটি উত্তোলন, বিনামূল্যে ডাস্টবিন প্রদান ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। যার ফলে রাজশাহী একটি পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে দেশে ও বিদেশে প্রশংসনীয় স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এছাড়া পরিবেশ উন্নয়ন ও নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে আনতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং সকল ক্লিনিকের আউট হাউজ মেডিক্যাল বর্জ্য পরিবেশসম্মত ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। সে মোতাবেক প্ল্যান্টের ভৌত অবকাঠামো এরই মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কর্মচারীরা মেডিক্যাল ও ক্লিনিক থেকে কাভার্ড ভ্যান দ্বারা বর্জ্য সংগ্রহ করে প্ল্যান্টে নিয়ে গিয়ে সেখানে পরিশোধন ও অপসারণ করছে।
এ বিষয়ে রাসিকের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় সিটি করপোরেশনের পরিচ্চন্ন বিভাগের কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা আর পরিশ্রমে রাজশাহীকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে মহানগরীতে ১২টি আধুনিক এসটিএস নির্মাণ করে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরো ৫টি এসটিএস নির্মাণাধীন। আগামীতে প্রতিটি ওয়ার্ডে এসটিএস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ১৪৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ‘রাজশাহী মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আমি আগামীতে মেয়র নির্বাচিত হলে রাজশাহীকে আরো পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করবো।