বরগুনার আমতলীতে কালো ধান (ব্ল্যাক রাইস) চাষ করে সাড়া ফেলেছেন এক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। প্রতিদিন স্থানীয় কৃষকরা তার এই ধান চাষ দেখতে ভিড় করছেন উপজেলার কালীবাড়ি গ্রামে। তরুণ ওই কৃষি উদ্যোক্তার নাম কাওসার হাওলাদার। জেলায় প্রথম এ জাতের ধান চাষে সাফল্য দেখে অনেক কৃষকই ব্ল্যাক রাইস চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। কালো ধানের চালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে সুস্থ রাখে। এছাড়া এ ধানের চালে রয়েছে ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধ ক্ষমতা। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওরা ইউনিয়নের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কাওসার ব্ল্যাক রাইসের পাশাপাশি ১৭ বিঘা জমিতে বঙ্গবন্ধু ১০০, ফাতেমা, ভিয়েতনাম, চায়না, বাসমতী, জিয়া-৮৬, পার্পেলসহ ৭ প্রজাতির ধান চাষ করছেন। এর মধ্যে কোনো জাতের চাল অনেক বেশি কালো, কোনোটি লাল, আবার কোনোটি লালচে রঙের। স্থানীয়রা জানান, দেশের বিভিন্নস্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কালো ধানের চাষ হলেও এ জেলায় এটাই প্রথম। তাই এলাকায় নতুন জাতের ধান চাষ দেখতে কাওসারের ক্ষেতে ভিড় জমাচ্ছেন তারা। ব্ল্যাক রাইস ধান গাছ প্রথমে সবুজ থাকলেও পাকার সঙ্গে সঙ্গে কালো হতে শুরু করে। এ চাল দামেও যেমন, পুষ্টিগুণেও তেমন ভরপুর। আহমেদ, রশিদ, পান্নাসহ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক বলেন, এ ধরনের চাল আগে কখনো দেখিনি। এলাকায় এই ধান প্রথমবার চাষ হচ্ছে। আমরা শুনেছি বরগুনা জেলায়ও এই প্রথমবার চাষ হচ্ছে এই ধান। এই প্রজাতির ধানে প্রচুর পুষ্টিগুণ আছে। আমরাও এ জাতের কালো ধান চাষে আগ্রহী। তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কাওসার হোসেন বলেন, ইউটিউবে প্রথম এ ধানের চাষাবাদের বিষয়ে দেখেন ও বিস্তারিত জানেন। পরে অনলাইনে সিলেট থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে ৩ কেজি ব্ল্যাক রাইস বীজ সংগ্রহ করেন। ব্ল্যাক রাইস নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের কমতি নেই। অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই ধান আবাদে। অন্য কৃষকের কাছ থেকেও প্রচুর সাড়া পেয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে ধান বীজ হিসেবে নেয়ার জন্য কয়েকজন প্রি অর্ডার করে রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, ব্ল্যাক রাইসকে স্বাভাবিক ধানের মতোই পরিচর্যা করতে হয়। অতিরিক্ত কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন না হলেও অন্য ধানের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়া যাবে। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছি। আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করব। এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার রেজাউল করিম বলেন, উপজেলায় এ ধানের চাষ প্রথম। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ব্ল্যাক রাইস ধানের দামও বেশি। কৃষি অফিস থেকে কাওসারকে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। শুধু কাওসার নয়, উপজেলার অন্য কোনো কৃষকও যদি এ জাতের ধান চাষ করতে চায় তাহলে তাদেরও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে কৃষি অফিস থেকে।