নেতাদের সাজা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না

মন্তব্য ফখরুলের

প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নেতাদের সাজা দিয়ে চলমান আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে দেয়া বিচারিক আদালতের সাজা উচ্চ আদালতের বহাল রাখার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গতকাল বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, এই মামলাগুলোর রায় দেয়া থেকে বুঝা যায় যে, এই সরকার সম্পূর্ণ রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করছে। ফরমায়েশি রায় দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের কারাগারে পাঠিয়ে আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চাইছে। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে গতকাল যে রায় দেয়া হয়েছে তার নিন্দা জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই ধরনের রায় দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না। জনগণ তাদের অধিকার অবশ্যই আদায় করবে।

গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মিথ্যা মামলায় নেতাদেরকে সাজা দেয়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে দূরে রাখা, রাজনীতি থেকে দূরে রাখা এবং সত্যিকার অর্থে এখানে যেন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন না হতে পারে, তারা যেন একদলীয় নির্বাচন আবার করতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকার এসব কাজ করছে। কিন্তু এবার জনগণ এটা করতে দেবে না। তিনি বলেন, এসব ঘটনা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল এই সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। একমাত্র জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করেই আইনের শাসন, গণতন্ত্রের শাসন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনকে ফেরত আনতে হবে। বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে গতকাল শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরস্থানে যান এবং সেখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতেও তারা অংশ নেন। এদিকে গতকাল ভোরে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে। এর আগে সকাল ১০টা থেকে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে বিএনপির বেশ কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সমবেত হন। দলের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ড্যাব, এ্যাব, জাসাস, জিসাস, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জিয়া পরিষদ, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, জিয়া মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

শেরেবাংলা নগরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিএনপি মহাসচিব গাবতলী বাস স্ট্যান্ডের সামনে দুস্থ ও গরিবদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় আমান উল্লাহ আমান, এসএ ছিদ্দিক সাজু, আমিনুল হকসহ মহানগর নেতারা ছিলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের মোট ৫৭টি স্পটে দুস্থদের মধ্যে এই খাবার সামগ্রী ও বস্ত্র বিতরণ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিকে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (ড্যাব) উদ্যোগে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে বিনামূল্য স্বাস্থ্যসেবা ও ঔষধ বিতরণ করা হয়।