পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের অ্যানাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের গবেষকদের হাত ধরে প্রথমবারের মতো দেশে তৈরি হলো ‘জলহস্তীর কঙ্কাল’। দীর্ঘ ১১ মাসের প্রচেষ্টায় এটি তৈরি করা হয়, যা জলহস্তীর প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রংপুর চিড়িয়াখানায় বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে লিওন নামে একটি বিশাল জলহস্তী। পরে পবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তের সহযোগিতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক আব্দুল জব্বারের অনুমতি নিয়ে একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জলহস্তীটির মরদেহ চিড়িখানা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়। এরপর প্রায় এক বছরের প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যানাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) অনুষদের শিক্ষার্থীরা এটি থেকে জলহস্তীর পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল প্রস্তুত করেন।
পবিপ্রবির অ্যানাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের ল্যাবে বর্তমানে ৯টি প্রাণীর কঙ্কাল সংরক্ষিত আছে। এছাড়া বর্তমানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কচ্ছপ ও মেছো বাঘের কঙ্কাল তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গবেষকরা জানান, বায়োমেডিকেল সায়েন্সে কঙ্কাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে প্রাণীর দৈহিক গঠন, উৎপত্তি, বয়স, লিঙ্গ নির্ধারণ, বিভিন্ন রোগ, মৃত্যুর কারণ, প্রজাতির ভিন্নতাসহ নানা অ্যানাটমিক্যাল ও অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবির অ্যানাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১১ মাসের প্রচেষ্টা শেষে দেশে প্রথমবারের মতো জলহস্তীর পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এটি ভেটেরিনারিয়ানদের জ্ঞান অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, এ ধরনের কাজ নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবিদার। এতে আমাদের ল্যাবগুলো সমৃদ্ধ হবে। শিক্ষার্থীদের আরো বেশি গবেষণাকাজে নিয়োজিত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কঙ্কালগুলো সংরক্ষণের জন্য কাচের ঘর তৈরি করে দেয়া হবে।