সড়কের চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা দূর হবে

বললেন আতিক

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুনভাবে সংযুক্ত ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলোর চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নতুনভাবে সংযুক্ত ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলোর উন্নয়নকাজ চলমান। নতুন এলাকার সড়কগুলোর চলমান উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং জনগণের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর কাওলা মধ্যপাড়া প্রধান সড়ক এলাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালি ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান এবং গোয়ালবাড়ী মোড় থেকে কাওলার নামাপাড়া পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নতুনভাবে সংযুক্ত ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলোর উন্নয়নকাজ চলমান। নতুন এলাকার সড়কগুলোর চলমান উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং জনগণের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত হবে।

ডিএনসিসি মেয়র আতিক বলেন, ৪৪ থেকে ৫৪ এই ১১টি ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোর উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন হবে। কাওলার এই সড়কটি ১০ থেকে ১২ ফিট ছিল। স্থানীয়রা কাউন্সিলের সহায়তায় ৩০ ফিট করে দেওয়ার পর আমরা কাজ করে দিয়েছি। সড়কটির নামকরণ করা হলো মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মফিজ উদ্দিন বেপারী সড়ক। এভাবে ২০ ফিট, ৩০ ফিট জায়গা দিন, আমরা সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তা করতে দেব। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য করোনা এবং বৈশ্বিক যুদ্ধের জন্য আমাদের উন্নয়নকাজ শুরু হতে কিছুটা সময় লাগছে। আমরা কিছু কিছু কাজ শুরু করেছি। টেকসই উন্নয়নের জন্য ড্রেনগুলোতে ৬ ফিট ব্যাসের পাইপ বসাচ্ছি। ড্রেন করার পরেই রাস্তা করতে হবে। না হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।

এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিউলেক্স ও এডিসসহ সব ধরনের মশার উপদ্রব কমাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই সময় কোনো পাত্রে কোনো ধরনের পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। আপনারা দেখেছেন আমাদের মশক কর্মীদের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্কাউট ও ন্যাশনাল ক্যাডেট কোররা বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তারা লিফলেট দিচ্ছে, স্কুলে যাচ্ছে, কলেজে যাচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। আমি সবাইকে অনুরোধ করছি তাদের কাজে সাহায্য করুন। তিন দিনে একদিন, জমা পানি ফেলে দিন- এটি সবার মাথার মধ্যে ঢুকাতে হবে। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত এলার্মিং। এটির জন্য নগরবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে, সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমাদের বাসাবাড়িতে কোনো পাত্রে পানি জমতে দেয়া যাবে না। আমাদের ঘরের আশপাশে দুই বাড়ির মাঝখানের ফাঁকা জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে, ছাদ পরিষ্কার রাখতে হবে। আমাদের এই অভিযান চলমান। বিশেষ করে নির্মাণাধীন ভবনে জমা পানি পেলে সেখানে আমরা অভিযান করে আইন অনুযায়ী ফাইন করব। মেয়র আতিক বলেন, আমাকে অনেকে ফোন করে বলছে যে, আমি ভুলে গেছি জমা পানি ফেলে দিতে। ভুলে গেলে চলবে না। ঘরে বাইরে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সম্প্রতি এক বাসায় এডিসের লার্ভা পাওয়ায় জরিমানা করা হয়। যার বাসায় জরিমানা করা হয়, তিনি আমাকে ফোন দিয়ে জরিমানা না করার জন্য বলেন। এখন কথা হচ্ছে, একজনের ঘরে জন্মানো এডিস মশায় আরেক ঘরের শিশু, বৃদ্ধসহ কোনো মানুষ অসুস্থ হলে দায় কার? অতএব যার যার বাড়ি তাকেই দায়িত্ব নিতে হবে। এর আগে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালিতে অংশ নিয়ে মেয়র বলেন, আমি যুবসমাজকে আহ্বান করছি, এমন কিছু খাওয়া যাবে না যেটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তামাক হচ্ছে মাদকাসক্তির প্রথম ধাপ। তাই সবাইকে তামাক পরিহার করতে হবে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে তামাক বর্জন করতে হবে। মাদকমুক্ত যুবসমাজ এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মেয়র আতিক বলেন, তামাক যারা সেবন করে, অনেকের মুখে ঘা, দাঁতে ঘা। আমাদের অনেক বয়স্করা তামাক খায়, গ্রামেগঞ্জে, শহরে-বন্দরে। এটা বড় সর্বনাশা, আসুন তামাককে না বলি। এ দিন বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালি ছাড়াও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান ও ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাওলা মধ্যপাড়া সড়ক উদ্বোধন শেষে দক্ষিণখান এলাকা পরিদর্শনসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন ডিএনসিসি মেয়র। ওই সময় এলাকাবাসীর পক্ষে কয়েকজন বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একই সময় তারা দক্ষিণখান এলাকায় স্ট্রিট লাইট লাগানো ছাড়াও গ্যাস ও পানির সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ রাস্তাগুলোর উন্নয়নের দাবি জানান। পরে এলাকাবাসীর সমস্যাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন মেয়র। সেই সঙ্গে ঢাকা-১৮ আসনের উন্নয়নের জন্য ৫৩০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনিছুর রহমান নাঈমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ইলোরা পারভীন ও জাকিয়া সুলতানা প্রমুখ।