ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিক্রিয়া

বাজেট রপ্তানি বহুমুখী ব্যবসাবান্ধব ও স্মার্ট বাংলাদেশ সহায়ক

বাজেট রপ্তানি বহুমুখী ব্যবসাবান্ধব ও স্মার্ট বাংলাদেশ সহায়ক

জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সভাপতি মাহবুবুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এই বাজেট স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি আমদানিকে নিরুৎসাহিত করে দেশীয় শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে এবারের বাজেট। এছাড়া সার্বজনীন পেনশন চালু ও সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর উপকারভোগীদের ভাতা বাড়ানো, চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ২২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও চট্টগ্রামে চামড়া শিল্প নগরী স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। গতকাল উত্থাপিত বাজেট উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চেম্বার সভাপতি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। চেম্বার সভাপতি বলেন, বাজেটে মোট ব্যয় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, মোট আয় ৫ লাখ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে যা সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ঘাটতি মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া মহিলা ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের ক্ষেত্রে ৪ লাখ টাকা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় লিঙ্গ করদাতাদের ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করহার নির্ধারণ করা হয়েছে যা চলমান মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়ক হবে।

নীট পরিসম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে করদাতার সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সীমা ৪ কোটি টাকা নির্ধারণ, ব্যাংক, তামাকজাত পণ্য ও মোবাইল ফোন কোম্পানি ব্যতীত অন্য সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ নগদ ব্যয়সীমা ৩৬ লাখ টাকার শর্তসাপেক্ষে কর্পোরেট করহার ২.৫ শতাংশ কমানো হয়েছে যা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অঝঝঊঞ প্রজেক্টের আওতায় ৬ লাখের অধিক মানুষকে কারিগরি শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যা খুবই প্রশংসনীয়। এই প্রজেক্টের আওতায় চট্টগ্রামে ভারী শিল্প কারখানাসহ ভবিষ্যৎ শিল্পায়নের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রামে ন্যূনতম ১ লাখ প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি করছি। রাজউক এবং সিডিএ এর আওতাধীন ও বহির্ভূত এলাকায় জমি রেজিস্ট্রেশনকালে যৌক্তিকভাবে উৎসে করহার বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে যারফলে অবস্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন উৎস কর নির্ধারণের ফলে এ বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যা পরিহারে সুষম উৎস কর নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি।

ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে জের টানা ব্যতিরেকে সম্পূরক শুল্ক ফেরত প্রদানের বিধান সংযোজনসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা ও সম্পূরক শুল্ক ফেরত গ্রহণের আবেদন দাখিলের সময় চজঈ দাখিলের বাধ্যবাধকতা রহিত করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।

তিনি আরো বলেন, ডলার সংকটের কারণে অনেক অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ স্থগিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্ক বৃদ্ধি করায় ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত উন্নয়নের খরচ আরো বাড়িয়ে দিবে। তাই অবকাঠামোগত উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এই শুল্ক পূর্বের ন্যায় করার সুপারিশ করছি।

ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ করতে গিয়ে ১৯১টি পোশাক শিল্পের পণ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করায় এই খাতের স্থানীয় উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতা সম্মুখীন হতে পারে এবং অন্যদিকে ২৩৪টি প্যাকেটজাত মৎস্য পণ্যে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করায় দেশীয় মাছকে প্যাকেটজাত করার উদ্যোগ নিরুৎসাহিত হতে পারে বলে মাহবুবুল আলম মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত