ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অন্যরকম

পৃথিবীর বুকে বিশাল গর্ত খুঁড়ছে চীন

পৃথিবীর বুকে বিশাল গর্ত খুঁড়ছে চীন

পৃথিবীর বুকে বিশাল এক গর্ত খুঁড়ছে চীন। সব মিলিয়ে এর দৈর্ঘ্য ৩২ হাজার ৮০৮ ফুট বা ১০ হাজার মিটার। আর এই গর্তকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। এরই মধ্যে এই গর্ত খননের কাজ শুরু হয়ে গেছে। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ভূত্বকের গভীরে ১০ হাজার মিটার বা ৩২ হাজার ৮০৮ ফুট লম্বা গর্ত খনন শুরু করেছেন। সরকারি সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, মঙ্গলবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তেল সমৃদ্ধ জিনজিয়াং অঞ্চলে চীনের সবচেয়ে গভীরতম বোরহোলের জন্য খনন কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে একইদিন সকালে চীন তার প্রথম বেসামরিক নভোচারীকে গোবি মরুভূমি থেকে মহাকাশে পাঠায়। আর এর মাধ্যমে মহাকাশ অভিযানে নতুন নজির স্থাপন করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী অর্থনীতির এই দেশটি। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুসারে, ভূপৃষ্ঠ থেকে সরু এই খাদটি ১০টিরও বেশি মহাদেশীয় স্তর বা শিলার স্তর ভেদ করবে এবং প্রায় ১৪৫ মিলিয়ন বছর আগের শিলা বৈশিষ্ট্যযুক্ত পৃথিবীর ভূত্বকের ক্রিটেসিয়াস সিস্টেমে পৌঁছে যাবে। অর্থাৎ চীনের এই গর্ত একে একে মহাদেশীয় স্তর ভেদ করতে করতে পৌঁছে যাবে ভূত্বকের একেবারে শেষ স্তরে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সেখানে প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ বছরের পুরোনো পাথর রয়েছে।

চীনের গর্ত খোঁড়ার এই কার্যক্রম সম্পন্ন হলে তা হবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শঙ্গ এভারেস্টের উচ্চতার চেয়েও গভীর। কারণ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ৩০ ফুট। চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিজ্ঞানী সান জিনশেং বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে বলেছেন, ‘খনন প্রকল্পের এই নির্মাণকাজের অসুবিধাকে দুটি পাতলা ইস্পাত তারের ওপর একটি বড় ট্রাক চালানোর সাথে তুলনা করা যেতে পারে।’ এর আগে ২০২১ সালে দেশটির কিছু নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার সময় পৃথিবীর গভীরে অন্বেষণ চালানোর কাজে বৃহত্তর অগ্রগতির আহ্বান জানিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মূলত এই ধরনের কাজ খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ শনাক্ত করতে পারে এবং ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকিগুলো মূল্যায়ন করতে সহায়তা করতে পারে। শুধু এটিই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কেও আগে থেকে নিশ্চিত হওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। একইসঙ্গে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুপাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার প্রযুক্তিতে আরো উন্নতি করতে পারবে চীন। অবশ্য চীনের হাতে খনন হতে চলা ৩২ হাজার ফুটেরও বেশি দীর্ঘ গর্তকে ‘পৃথিবীর গভীরতম’ বলা যাবে না। এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর গভীরতম গর্ত হচ্ছে রাশিয়ার কোলা সুপারডিপ বোরহোল। গভীরতায় সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট এই গর্ত ৪০ হাজার ২৩০ ফুট বা ১২ হাজার ২৬২ মিটার গভীর। ১৯৮৯ সালে কোলা সুপারডিপ বোরহোল নামের এই গর্তটি খোঁড়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। আর গর্তটি খননে সময় লেগেছিল ২০ বছর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত