শিশুদের জন্য তৈরি করা হবে ‘চিলড্রেন পার্ক’। যেখানে হাতে-কলমে শেখানো হবে সড়কে চলাচলের নিয়ম। সড়ক দুর্ঘটনারোধে এমন বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে জাইকা যৌথভাবে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। এরইমধ্যে সেখানে স্কুল শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক নিয়ম শেখানোর কাজ শুরু করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেইফটি প্রজেক্ট (ডিআরএসপি)’। গতকাল শনিবার (৩ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ডিআরএসপির ম্যানেজার (কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) সামনুন সুলতানা বলেন, শুধু ঢাকা সিটি নয় বাংলাদেশের কোথাও এমন চিলড্রেন পার্ক নেই। আমরা একটা চিলড্রেন পার্ক করতে চাচ্ছি, যেখানে বাচ্চারা যাবে, ট্রাফিকের রুলস রেগুলেশন সম্পর্কে জানবে। তিনি আরো বলেন, আমরা ছোট পরিসরে শুরু করব, একটা শুরু করলে আরো অনেক করা যাবে। ট্রাফিক সিগন্যাল, জেব্রা ক্রসিং নিয়ে কাজ করব। সবার সহযোগিতা পেলে আরো বড় পরিসরে যেতে পারব। শিশু শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক রুলস শেখানোর উপর জোর দিয়ে সামনুন বলেন, দেশের মানুষের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করা দরকার। রাস্তা খালি আছে, আমরা সিগন্যাল না মেনে পার হয়ে যাই। এটার শুরু করতে হবে বাসা থেকে স্কুল থেকে। শিক্ষার্থীরা ছোট, ওদের যেভাবে বুঝানো হবে, শেখানো হবে ধীরে ধীরে তারা এতেই অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এর রেজাল্ট আমরা হয়তো ইন্সটেন্ট পাব না। ৫-১০ বছর পর সেটার রেজাল্ট পাব। তারা যখন নিজে ড্রাইভ করবে বা রোড ক্রস করবে, তখন যেন তারা শিক্ষাটা অ্যাপ্লাই করতে পারে।
তিনি বলেন, জাপানও ঠিক এভাবেই শুরু করেছে। আজ থেকে ৩৭ বছর আগে জাপানে কিন্তু এতো ভালো ট্রাফিক রুলস বা রোড ছিল না। এখন বিশ্বের অন্যতম দেশ জাপান, যারা ট্রাফিক রুলসগুলো ভালোভাবে মেনে চলছে। ওরা ওদের কার্যক্রম স্কুল থেকে স্টার্ট করেছিল। ডিআরএসপি প্রকল্পের এক্সপার্ট টিমের ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার তেতসুশি ইরি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) একত্রে বাস্তবায়ন করছে ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট (ডিআরএসপি)। এটার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা মহানগরীতে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ ও যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। ইতোপূর্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করা হয়েছে। তিনি বলেন, যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। জাইকা রোড সেফটি প্রজেক্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে তারা কীভাবে সস্পৃক্ত করছে এবং সে দেশের মানুষের মাইন্ড সেটিং কীভাবে চেঞ্জ করছে সেগুলো নিয়ে আরো ২ বছর কাজ করা হবে। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বাত্মক সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ডিএমপির সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক ‘ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্ট (ডিআরএসপি)’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পটি ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছরের মার্চ থেকে জাইকার সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।