ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু

পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা
ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু

ঈদ সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে কোরবানির পশু মোটাতাজা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খামারিরা। এরই মধ্যে এ পশু বিক্রির শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট হাটবাজারে। তবে দাম চড়া থাকায় তেমন কেনাবেচা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার ৯টি উপজেলায়

প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ কোরবানির পশু। এর মধ্যে ১ লাখ ৭২ হাজার ৭১২টি গরু ও ১ লাখ ৬০ হাজার ছাগল রয়েছে। বাকি পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে মহিষ ও ভেড়া। বিশেষ করে শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, এনায়েতপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এসব পশুকে ঘাস, খড়, বিভিন্ন প্রকারের ভুসি, ডালের গুঁড়া ও খৈলসহ দেশীয় পদ্ধতিতে ষাঁড় মোটাতাজা করা হচ্ছে প্রায় ৬ মাস ধরে। তবে শাহজদুপর ও উল্লাপাড়া অসংখ্য গো-খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির গরু পরিচর্যা ও মোটাতাজা করছেন কৃষক। জেলার অনান্য উপজেলার গ্রামঞ্চলে ছোটোখাটো খামারে পরিচর্যা ও মোটাতাজা করছে নারী-পুরুষ।

খামারে রক্ষিত ষাঁড় গরুগুলোকে পরিমিত খাবার পরিবেশন ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি পরিচর্যার মাধ্যমে গরু স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছে। এছাড়া অধিক লাভের আশায় পশু লালন-পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও প্রান্তিক কৃষকরা। জেলার চাহিদার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পূরণ করে এখানকার গবাদি পশু। এ অঞ্চলে গো-খাদ্যের চড়া দামে ছোটোখাটো খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এজন্য তারা ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আমদানি বন্ধের দাবি জানান। লাভে গরু বিক্রি করতে না পারলে খামারিদের লোকসান গুনতে হবে। তবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে কোরবানির পশুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের নাম প্রকাশে

অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এবার জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ছোট-বড় খামারি বিভিন্ন প্রজাতির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা মোটাতাজা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ৪ লাখ গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এ জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬০ হাজার। এ চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাবে ঈদের আগেই। এসব পশু মোটাতাজাকরণে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক খাবার যাতে ব্যবহার না করে, এজন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু কেনা কাটার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খামারিরা বলেন, কোরবানির ঈদে তারা এসব গবাদিপশু বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি আয় করবে। খামারিরা নিজ বাড়ি ও খামারে বছরজুড়ে গবাদি পশুগুলো লালন-পালনের মাধ্যমে মোটাতাজা করে থাকে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানান, এ উপজেলায় গো-খামারের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। খামারিদের গো-খাদ্যের চাহিদা মেটাতে উন্নতমানের ঘাসের আবাদ করতে হবে। এতে গো-খাদ্যের খরচ বেশ কমে যাবে। যেসব খামারি শুধু ভুসি, খৈল, খড়ের মতো গো-খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল তাদের গরু পালন করে এবার লাভবানের সম্ভাবনা নেই। কারণ গো-খাদ্যার সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকতা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানান, শাহাজাদপুর ও উল্লাপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ওষুধপত্র দেয়া হচ্ছে। এবার জেলায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার পশু কেনা বেচা হবে। জেলার প্রতিটি হাটে ব্যাংকের লোকজন থাকবে। গবাদিপশু ক্রেতা বিক্রেতারা যে কোনো ব্যাংকের এ্যাকাউন্ট এবং কিউআর কোড ব্যবহার করে ই-ব্যাংকিং লেনদেন সেবা গ্রহণ করতে পারবে। জেলায় ৩১টি স্থায়ী ও ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাটের মাধ্যমে এসব গবাদি পশু বিক্রি

করা হবে। এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে পশুর ছবি আপলোড করে অনলাইনেও বিক্রি করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত