সুসংবাদ প্রতিদিন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদেশি আম চাষে মান্নানের সাফল্য
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক
সারি সারি আম গাছ। সবুজ পাতার মধ্যে ধরে আছে- মিয়াজাকি বা সূর্যডিম, চিয়াংমাই, ডকমাই, ব্রুনাই কিং, আমেরিকান পালমা, কিউযায়সহ নানা প্রজাতির বিদেশি জাতের আম। এমন দৃশ্য দেখা যায়- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার দেবগ্রাম এলাকায় আব্দুল মান্নান মিয়ার আম বাগানে। বিদেশি জাতের আমের আকার-আকৃতি, রঙ, মিষ্টতা আর স্বাদ রয়েছে প্রচলিত আম থেকে ভিন্ন। এরই মধ্যে তার গাছের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। যা আগত লোকদের মুগ্ধ করছে। সরেজমিনে বাগান পরিদর্শনে দেখা যায়, চারদিকে নেটজাল আর জালি দিয়ে বেড়া। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ছে সারি সারি বিদেশি জাতের আমের গাছ। প্রতিটি গাছের বয়স প্রায় ৩ বছর। লম্বা রয়েছে সাধারণত ৭-৮ ফুট। প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে মিয়াজাকি বা সূর্যডিম, চিয়াংমাই, ডকমাই, ব্রুনাই কিং, আমেরিকান পালমা, কিউযায়সহ নানা প্রজাতির বিদেশি জাতের আম। বেশ কয়েকটি গাছের আম দেখা যায় অনেকটা পেঁপের মতো। কাঁচা অবস্থায় এর রঙ কালো সবুজ। আবার অনেক গাছে দেখা যায় রঙিন আম।
আম চাষি আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই গাছের প্রতি আমার অন্য রকম শখ ছিল। কিন্তু চাকরি করার সুবাদে বাগান করার সুযোগ হয়নি। চাকরি থেকে অবসরে বাড়িতে আসার পর গত ২ বছর আগে ইউটিউবের কল্যাণে দেশি-বিদেশি নানা জাতের আম চারা ও চাষ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেই। এরপর স্থির করি বাড়িতে বিদেশি জাতের আমের বাগান করার। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে বাড়ি সংলগ্ন প্রায় ২০ শতক জায়গার মধ্যে বিদেশি জাতের আম বাগান গড়ে তুলি। অনলাইনের মাধ্যমে রাজশাহী, রংপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা সংগ্রহ করি। বর্তমানে আমার বাগানে ৩০টি বিদেশি আম চাষি আব্দুল মান্নান মিয়া আরও বলেন, আমের চারা ক্রয়, রোপণ, বেড়া দেয়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ বছর প্রতিটি গাছে ভালো ফলন এসেছে।
বেশ কয়েকটি গাছের মধ্যে ফলন এসেছে, যার প্রতিটা আমের ওজন হবে ২ কেজি। আর কিছু গাছে এক একটি আমের ওজন ৩০০ গ্রামের উপর হবে। দেশের মাটিতে বিদেশি জাতের আমের ফলন নিয়ে এক প্রকার দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু এখন আর সেটি নেই। আশা করছি ফলন ভালোই হবে। পাশাপাশি ফলন এসেছে দেশীয় গাছেও।
বিদেশি আম গাছ দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, বিদেশি জাতের রঙিন আম দেখতেই এখানে এসেছি। আগে কোথাও এসব আম চাষ হয়নি। বিদেশি জাতের আম দেখে খুবই ভালো লেগেছে। দর্শনার্থী হাবিবুর রহমান জানান, আমগুলো দেখে খুব ভালো লেগেছে। আরেক দর্শনার্থী আতিকুল ইসলাম জানান, আমার বাড়িতেও এবার বিদেশি জাতের আমের চারা লাগানোর ইচ্ছা পোষণ করেছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম জানান- নানা প্রজাতির বিদেশি আমের আবাদ শুরু হয়েছে। আম দেখতে খুবই সুন্দর, রয়েছে সুস্বাদুও। তবে সৌখিন মানুষেরা মূলত এ চাষ করছে বেশি। আব্দুল মান্নান বিদেশি জাতের আমের চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন। ফলন ভালো করতে তাকে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করা গেলে কৃষক লাভবান হবেন।