৬৫ বছর আগে প্রখর রোদ আর তীব্র গরম অনুভব করেছিল দিনাজপুরের মানুষ। ১৯৫৮ সালে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এ জেলায় তাপমাত্রা বিরাজ করেছে ৪০ ডিগ্রির উপরে। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রার পারদ। প্রাণিকূলে নেই স্বস্তি। প্রকৃতির বাতাসে গরম হাওয়া। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। খড়া আর তীব্র গরমে নষ্ট হচ্ছে ফসল।
গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে ও রহমতের বৃষ্টির আশায় মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায় ও বিশেষ মোনাজাতে দোয়া করেছেন মুসল্লিরা।
গতকাল সকাল পৌনে আটার সময় দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ঈদগাহ মাঠে প্রায় ১ হাজার মুসল্লির উপস্থিতিতে সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায় করেন এলাকাবাসী। নামাজে ইমামতি করেন বড়ইল মাদ্রাসার ইমাম আব্দুল কাউয়ুম। নামাজ আদায় শেষে আনোয়ার হোসেন বলেন, এর আগে এমন গরম অনুভব করিনি। গরমে কাজ-কর্ম ঠিকমতো করতে পারি না। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে অনেক সমস্য হচ্ছে। রহমের বৃষ্টির আশায় তাই নামাজ আদায় করলাম। আজিজুল হক বলেন, অনাবৃষ্টি আর গরমে ফসলের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে লিচু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গাছের ফল নষ্ট হচ্ছে। গরমে মানুষের অবস্থা নাজুক। তাই সকালে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য হয়ে নামাজ আদায় করলাম।
টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম মিম বলেন, জীবনদশায় এমন গরম আগে অনুভব করিনি। গরমে পড়ালেখা ঠিকমতো করতে পারছি না। বাসা থেকে কোথাও যাওয়ার অনুমতি মিলছে না।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে কামরুল ইসলাম কামাল বলেন, অসহনীয় কষ্টে মানুষ সময় কাটাচ্ছে। আমরা এতটাই অনুতপ্ত যে বলার ভাষা নেই। আমরা কয়েকজন মুরুব্বি ও ইমামদের সঙ্গে আলোচনা করেছি যে, বৃষ্টির আশায় সালাতুল ইস্কিসকার নামাজ আদায় করব। সবার সম্মতিক্রমে নামাজ আদায় করলাম। বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম। আল্লাহপাক যেন মানুষকে রহমতের ছাঁয়ায় ঢেকে নেন। সামনে আরো দুই দিন নামজের আয়োজন আমরা করব। আমরা আশা করছি আল্লাহ আমাদের নিরাশ করবে না। তিনি রহমতের বৃষ্টি আমাদের দিবেন। ঈদগাহ মাঠে প্রায় ১ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিল। এখন অনেকেই জানে হয়তো সামনের দিনে আরো বেশি মানুষ নামজে অংশগ্রহণ করবে। একদিকে দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত শনিবার রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন এ ধরনের তাপপ্রবাহ থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।